গত বছর এপ্রিল মাসে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। সেই সময় মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত প্রায় একমাস তিনি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সোমবারই বাড়ি ফেরেন বাপ্পি। কিন্তু মঙ্গলবারই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারিক চিকিৎসক তাঁকে ফের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে সেই হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের ডিরেক্টর ডাঃ দীপক নামজোশি জানিয়েছেন, বাপ্পি লাহিড়ি গত এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সোমবার তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তাঁর পরিবারের তরফে ডাক্তারকে তাদের বাড়িতে দেখার জন্য ডাকা হয়। এরপরেই তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। একাধিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা ছিল তাঁর। মধ্যরাতের কিছু আগে ওএসএ (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া) এর কারণে তিনি মারা যান।”
১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ি। বলিউডে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’ প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন বহু গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি- ৩’ এর জন্য। কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির তুতো মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি— দু’জনেই সঙ্গীত জগতের মানুষ ছিলেন। একমাত্র সন্তান বাপ্পিও ছেলেবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা, বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম। মা-বাবা নাম দিয়েছিলেন অলোকেশ, কিন্তু জনপ্রিয়তা পান বাপ্পি নামে। ডিস্কোর পাশাপাশি বিভিন্ন অসাধারণ গানে সুর দিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি। এছাড়াও বাংলা সিনেমা জগতের বিভিন্ন গান যেগুলি প্রায় কাল্টের তকমা পেয়েছে যেমন "অমর সঙ্গি", "চিরদিনই তুমি যে আমার", "গুরুদক্ষিনা" এই সব গানের সুরেও ছিল বাপ্পি লাহিড়ির ছোঁয়া।