এনআরএস এ সংকটজনক পরিস্থিতি

frame এনআরএস এ সংকটজনক পরিস্থিতি

Biswas Riya

করোনা আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যুর জেরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা পরিষেবা ভীষণভাবে ব্যাহত। হাসপাতালের পিজিটি, হাউসস্টাফ, ইন্টার্ন-সহ ৩৯ জন চিকিৎসককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।  এঁদের মধ্যে রয়েছেন আট জন অ্যানাস্থেটিস্ট। মেল মেডিসিন ওয়ার্ড এবং সিসিইউ-এ চিকিৎসাধীন রোগীদের ছুটি দিয়ে জায়গাটি জীবাণুমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনআরএসের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন। এরই মধ্যে সোমবার শ্বাসকষ্টজনিত কারণে এক মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সন্দেহের নিরসন ঘটাতে মৃতের করোনা-পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই পরিজনেরা দেহ নিয়ে চলে যান! হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই মৃতদেহ এবং পরিজনেদের খোঁজ করছে পুলিশ।

 

হাসপাতালের সিসিইউ-এ চিকিৎসাধীন করোনা-পজিটিভ রোগীর মৃত্যুর পরে রবিবারই একদল চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছিল। মহেশতলার বাসিন্দা ৩৪ বছরের ওই মৃত যুবকের সংস্পর্শে আর কারা এসেছিলেন, এ দিন সেই সংক্রান্ত একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয়। বিকেলে অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়, উপাধ্যক্ষ তরুণ পাঠক এবং ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাসকে নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের সাংসদ-চিকিৎসক শান্তনুবাবু। বৈঠক শেষে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে এখন ১২ জন রোগী চিকিৎসাধীন। ওই রোগীদের মধ্যে কয়েক জনকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উপসর্গ দেখা দিলে তাঁদের হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছে। সিসিইউ-এ ১৪টি শয্যার মধ্যে এক জন রোগী আছেন। তাঁকেও ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে।’’

 

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এত জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানোয় ধাক্কা খাচ্ছে অস্ত্রোপচার-সহ সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন কর্তৃপক্ষ।

 

গত ৩০ মার্চ হিমোফিলিয়ার ওই রোগী প্রথমে মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বুধবার তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তরিত করা হয়। এর পরে ওই রোগীর করোনা-উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে এসএসকেএমে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট আসার আগেই শনিবার সকালে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। রাতে রিপোর্ট এলে জানা যায়, মৃত যুবক করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই যুবক যে হেতু শুরু থেকেই আইসোলেশনে ছিলেন না, তাই চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ৮১ জনকে কোয়রান্টিন করতে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনকে সরকারি ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। বাকিদের হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। ৮১ জনের মধ্যে দু’জন রোগী-সহ মোট ১৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

 

এ বিষয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘মেল মেডিসিন এবং সিসিইউ-এ আপাতত রোগী ভর্তি বন্ধ থাকবে। এখন থেকে জ্বর, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের প্রথমেই আলাদা রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

 

Find Out More:

Related Articles: