এ বছর যাঁদের হারালাম
সুভাষ ভৌমিক: বছরের শুরুতেই, ২২ জানুয়ারি জীবনাবসান হয় সুভাষ ভৌমিকের (Subhash Bhowmick)। কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) এবং মোহনবাগান (Mohun Bagan), দুই প্রধানের হয়েই খেলেছিলেন সুভাষ। দেশের হয়ে এশিয়াডে পদক জিতেছিলেন। ১৯৭১ সালে মারডেকা কাপে ফিলিপিন্সের বিরুদ্ধে দুরন্ত হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। পরবর্তী জীবনে হয়ে উঠেছিলেন ধুরন্ধর কোচ। ইস্টবেঙ্গল এবং চার্চিল ব্রাদার্সকে জাতীয় লিগ দেওয়া সহ একাধিক সাফল্য আছে তাঁর।
চরণজিৎ সিং: ১৯৬৪ সালের টোকিও অলিম্পিক্সে (Tokyo Olympics) সোনা জিতেছিল ভারতের পুরুষ হকি দল। সেই দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চরণজিৎ। চার বছর আগে পাকিস্তানের (Pakistan) কাছে ফাইনালে হারতে হয়েছিল, টোকিওতে তারই বদলা নেয় ভারত। চির-প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ১-০ গোলে হারান চরণজিৎরা। ২৭ জানুয়ারি ৯১ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর।
সুরজিৎ সেনগুপ্ত: ১৭ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় কলকাতা ফুটবলের (Calcutta Football) আর এক কিংবদন্তি সুরজিৎ সেনগুপ্তের। তাঁকে কেড়ে নেয় কোভিড। ১৯৫১ সালের ৩০ অগস্ট সুরজিতের জন্ম। হুগলির মানুষ সুরজিতের প্রথম বড় ক্লাব মোহনবাগান। ১৯৭২ সাল থেকে দু’বছর মোহনবাগানে ছিলেন। ১৯৭৪ সালে ইস্টবেঙ্গলে। সেই থেকে টানা ছ’বছর লাল-হলুদে খেলেন। ১৯৮০ সালে সই করেন মহমেডানে। উইং ধরে তাঁর দৌড়, ড্রিবলিং এবং ক্রসিং ময়দানি রূপকথায় লেখা রয়েছে।
রডনি মার্শ: মোটা গোঁফ, বোতাম খোলা শার্ট, ব্যাগি গ্রিন টুপি পরে, গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো লোকটাকে সবাই চিনত। এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হন মার্শ (Rodney Marsh)। হাসপাতালে সপ্তাহখানেকের বেশি লড়াই চালানোর পর ৪ মার্চ মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৭৪।
শেন ওয়ার্ন: মার্শের মৃত্যুর খবর তখনও সেভাবে ছড়ায়নি, ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আকস্মিক মৃত্যু হয় সর্বকালের সেরা স্পিনার ওয়ার্নের (Shane Warne)। এক তো তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্ব, তার উপর মৃত্যুটা পুরো আকস্মিক। মাত্র ৫২ বছর বয়স হয়েছিল। বন্ধুবান্ধব নিয়ে থাইল্যান্ডের কোহ-সামুই দ্বীপে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। হোটেলের ঘরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি।
অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস: ২০২২ সালে মৃত্যু হওয়া আরও এক অজি ক্রিকেটার। কুইন্সল্যান্ডে এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় মাত্র ৪৬ বছর বয়সে প্রাণ হারান সাইমন্ডস (Andrew Symonds)। বিস্ফোরক ব্যাটার, বল হাতে দক্ষ স্পিনার এবং দুর্ধর্ষ ফিল্ডার, ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ বলতে যা বোঝায়, তিনি তাই ছিলেন। দু' বার বিশ্বকাপ জিতেছেন।
পেলে: বছরের একদম শেষ লগ্নে জীবনাবসান হল ফুটবল সম্রাট পেলের (Pele)। কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে অনেকদিক ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হাসপাতালের শয্যা থেকেই দেখছিলেন কাতার বিশ্বকাপ। শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারলেন না, ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে চলে গেলেন তিনবার বিশ্বকাপ জয়ী জাদুকর।