ভোটের আগে মমতাময়ী বাজেট!
কেজরীওয়ালের থেকে শিক্ষা নিয়ে ভোটের আগে মমতাময়ী বাজেট ঘোষণা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর। একগুচ্ছ প্রকল্প ও ছাড়ের কথা ঘোষণা করে রাজ্যবাসীর মন পাওয়ার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ মাসুলে ছাড়, মোটর ভেহিক্যালসের সমস্ত রকম জরিমানা মকুব, চা-বাগানগুলিতে কৃষি আয়কর মকুবের মতো একাধিক উল্লেখ। যা দেখে অনেকেই দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবাল সরকারের মডেলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, একেবারে নির্বাচনমুখী বাজেটই পেশ করেছে রাজ্য। দিল্লি সরকার বিদ্যুতের মাসুলে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ছাড় দিয়েছিল। একই রকম ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিদ্যুতে ৭৫ ইউনিট ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে।
* আর্থিক মন্দা সত্ত্বেও ৯ লাখ ১১ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে।
* আগামী ৩ বছর ১০০ টি নতুন MSME পার্কের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব।
* সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বাংলার পডুয়াদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে কলকাতা, শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুরে 'মহাত্মা গান্ধী, জয় হিন্দ ও আজাদ' নামে ৩টি সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমি তৈরি করা হবে।
* ২ হাজার ৭৪৪টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে কন্যাশ্রী ও বিভিন্ন সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে ।
* অনগ্রসর জাতির জন্য বরাদ্দ ৮০৫.১০ কোটি টাকা।
* উপজাতি উন্নয়নে বরাদ্দ ৯৩৫ কোটি টাকা।
* সংখ্যালঘুদের জন্য ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব।
* 'বন্ধু' প্রকল্পে তফশিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত বয়স্কদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা করে বার্ধ্যকভাতা।
* মোট ১১টি নতুন প্রকল্পের ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর।
* 'হাসির আলো' প্রকল্প- গরিব মানুষদের জন্য বিদ্যুৎ প্রকল্প। বরাদ্দ ২০০ কোটি টাকা।
* 'চা সুন্দরী' প্রকল্প- চা শ্রমিদের জন্য বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকা। চা বাগানের গৃহহীন শ্রমিকদের আবাসন দেওয়ার লক্ষ্যে এই প্রকল্প।
* 'কর্মসাথী' প্রকল্প- আগামী এক বছর বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণদানের ব্যবস্থা। প্রতিবছর ১ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে। ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
* বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে।
* 'জয় জহর' প্রকল্পে তফশিলি উপজাতি বয়স্কদের ১০০০ টাকা করে বার্ধক্যভাতা দেওয়া হবে।
* বিরসা মুন্ডা বিশ্ববিদ্যালয়, আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যে আরও নতুন ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় আগামী বছরে। বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা।
* ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য 'বাংলাশ্রী' প্রকল্প, বরাদ্দ ১০০ কোটি ।
* বিনামূল্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, বরাদ্দ ৫০০ কোটি.। এর সব খরচ রাজ্য সরকার নিজে দেবে। দেড় কোটি পরিবার উপকৃত হবে।
* তফশিলি উপজাতিদের জন্য নয়া 'জয় জহর প্রকল্প', বরাদ্দ ৫০০কোটি টাকা।
* তফশিলি জাতি জন্য নতুন 'বন্ধু' প্রকল্প, বরাদ্দ ২৫০০ কোটি টাকা।
* বাংলা দেশের মধ্যে মডেল।
* ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা ছোট ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ।
* বড় শিল্পে ৪.৪৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত।
* ২২,২৬৭ কোটি বিদেশি বিনিয়োগ রাজ্যে।
* বাজেট বই না এসে পৌঁছনোয় বিরোধীদের হই- হট্টগোল।
* ১০০ দিনের কাজ, ক্ষুদ্র শিল্প, গ্রামীণ গৃহ নির্মাণ, গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ইজ অফ গোয়িং বিজনেস, ই-টেন্ডারিংয়ে বাংলা প্রথম।
* কেন্দ্রের মেক ইন ইন্ডিয়াকে তোপ।
* একইভাবে ভারতের শিল্প বৃদ্ধির হার যেখানে ০.৬ শতাংশ, সেখানে বাংলার ক্ষেত্রে ৫ গুণ, ৩.১ শতাংশ।
* দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার তলানিতে। কিন্তু একইসময়ে বাংলার GDP বৃদ্ধির হার ১০.৪ শতাংশ, যা ভারতের দ্বিগুণ।
* অচ্ছে দিন কোথায়?
* দেশের কৃষকবন্ধুরা চরম সংকটের মুখে।
* সবকটি অর্থনৈতিক সূচক নেমে গিয়েছে।
* ভারতের স্থান ১০ স্থান এ নেমে গিয়েছে।
* এখন ভেন্টিলেশনে চলে গেছে।
* দেশ চরম দুরাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
বিরোধীরা বলছেন, রাজ্য সরকার যে সব প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে তা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি তারা এটাও বলছেন, এতগুলো প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন ঠিকই, কিন্তু এর অর্থ সংস্থান কোথা থেকে হবে বাজেটে তার স্পষ্ট কোনও দিশা নেই।