ভোর রাতে দিল্লিতে গ্রেফতার চন্দ্রশেখর আজাদ , আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের সামনে , গ্রেফতার হওয়া নাবালকদেরকে মারধোরের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
শুক্রবার রাতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের সামনে হাজির হন বহু মানুষ, তাঁদের একটাই দাবি, নাগরিকত্ব আইনের বিক্ষোভ চলাকালীন আটকদের মুক্তি দিতে হবে পুলিশকে। গতকাল (শুক্রবার) দিল্লির দরিয়াগঞ্জ সংশোধিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বিক্ষোভকারীদের, তখনই ওই ৪০ জনকে আটক করে দিল্লি পুলিশ। এদিকে শুক্রবার পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে আসা ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদকে আবারও ভোর রাতের দিকে আটক করা হয়েছে। জানা গেছে, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের সময় পুলিশ যাঁদের আটক করেছিল তাঁর মধ্যে ছিল ১৪-১৫ বছরের ৮ কিশোরও। ওই নাবালকদেরও প্রথমে আটক করে দিল্লি পুলিশ। পরে নাবালকদের অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের ছাড়াতে এলে তাঁদের মুক্তি দেয় পুলিশ।
কিন্তু মুক্তির পর ওই নাবালকদের শরীরে পুলিশি অত্যাচারের চিহ্ন মিলেছে বলে অভিযোগ। তাঁদের শারীরিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন যে নাবালকদের হাত ফুলে গেছে এবং মাথায় আঘাত পাওয়া এক শিশুকে লোকনায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
শুক্রবার দিল্লির দরিয়াগঞ্জের সুভাষ মার্গে একটি প্রাইভেট গাড়ি পার্ক করাকে ঘিরে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেওয়ার পরেই পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও জলকামান চালায়। সূত্র জানিয়েছে, ওই ঘটনায় ৮ পুলিশ কর্মী সহ কমপক্ষে ৩৬ জনকে আহত অবস্থায় লোকনায়ক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে যে, বিক্ষোভ থামাতে তাঁরা কেবল “হালকা বলপ্রয়োগ” এবং জল কামান ব্যবহার করেছে। “শুক্রবার দুপুরে জামা মসজিদ এলাকায় প্রচুর লোক নমাজের পাঠের জন্য জড়ো হয়েছিলেন। নমাজের পরে তাঁরা প্রতিবাদ জানাতে যন্তর মন্তরে যেতে চাইলেও আমরা তা আটকে দিই। কারণ যন্তর মন্তরে এক হাজারের উপরে মানুষ জমায়েতের জায়গা ছিল না”, সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন এক প্রবীণ পুলিশ কর্তা।
তিনি আরও জানান যে, পুলিশের তাড়া খেয়ে বিক্ষোভকারীরা জামা মসজিদ থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে বেরিয়ে গেলেও পরে নিকটস্থ দিল্লি গেটে ফের জমায়েত করে তাঁরা। পুলিশ তাঁদের তখন সামনে এগিয়ে যেতে বাধা দেয় এবং এলাকাটি ব্যারিকেড করে ঘিরে রাখে।
তবে সন্ধ্যা নাগাদ কিছু প্রতিবাদকারী পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। তখনই পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত ৫৮ পুলিশ বাহিনী আনতে হয় বলে জানান ওই পুলিশ আধিকারিক।