রাজ্যে এনআরসি হতে দেব না, বরাভয় মমতার

Biswas Riya

উত্তরবঙ্গের মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন আসামে এনআরসি হওয়ার পর থেকে। এমনকি অভিযোগ এই আতঙ্কে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। লোকসভা ভোটের পরে প্রথমবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসে সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাভয় দিলেন রাজ্যের মানুষকে। সোমবার শিলিগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে কোনও এনআরসি হবে না। কোনও ভাগাভাগি করতে দেব না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আমরা আপনাদের পাহারাদার।’’

লোকসভা ভোটেও এনআরসি নিয়ে প্রচার চালিয়েছিল যুযুধান দুই দল, তৃণমূল এবং বিজেপি। গত মার্চ মাসে আলিপুরদুয়ারের এক সভায় এসে অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন, এর পরে পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি হবে। যার জবাবে মমতা বারবার বলেছেন, কিছুতেই এই রাজ্যে এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। উত্তরবঙ্গের ফল দেখলে কিন্তু স্পষ্ট, সাধারণ মানুষের বেশির ভাগই মত দিয়েছেন বিজেপির পক্ষে। গোর্খারা তো বটেই, রাজবংশীরাও দাঁড়িয়েছেন এনআরসি-র পক্ষে। 

অসমে এনআরসি তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পরে কিন্তু ছবিটা কিছুটা হলেও বদলে গিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, সেই তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৯ লক্ষের মধ্যে বেশির ভাগই হিন্দু। তা ছাড়াও আছেন গোর্খা এবং রাজবংশীরাও। তার পর থেকেই কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙের মতো উত্তরের জেলাগুলিতে এই নিয়ে প্রচারে নেমেছে তৃণমূল। তাদের কথায়, গোর্খা তো বটেই, গোটা উত্তরবঙ্গে রাজবংশীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। এই রাজ্যে এনআরসি হলে তাঁরাও বিপদে পড়বেন। 

এ দিন মমতাও একই কথা বললেন। বিশেষ করে রাজবংশীদের লক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজবংশীদের ভালবাসি। ওদের গিয়ে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে— তুমি রাজবংশী নাগরিকত্ব পাবে, তুমি এখানে থাকবে, বাঙালিরা থাকবে না। তা কখনও হয়!’’ এর পরে তিনি বলেন, ‘‘রাজবংশী ভাইবোনেদের কাছে আমার ছোট্ট একটা তথ্য। আমি ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আপনাদের ভালবাসি তাই বলছি, কারও কথায় ভুল করবেন না। অসমে যারা বাদ পড়েছে, ১৩ লক্ষ বাঙালি, ১ লক্ষ হিন্দিভাষী, ১ লক্ষ পাহাড়ি। ওই বাঙালিদের মধ্যে বেশির ভাগ রাজবংশীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো ভাবতে পারি না যে বাংলায় শুধু বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে। দরকার হলে বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে না, শুধু মানুষ থাকবে।’’ 

 

এই ‘বিপদে’ তিনি এবং তাঁর দলই যে একমাত্র রক্ষাকারী, সে কথাই পরোক্ষে মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আমাদের সরকার আপনাদের পাশে ছিল, আছে, এবং আগামীতেও থাকবে। আমরা আপনাদের পাহারাদার।’’ 

 


Find Out More:

Related Articles: