দীপিকার চোখে জলের ধারা
রুপোলী পর্দার শিল্পীদের আকর্ষণ আমাদের কাছে চিরন্তনই। তাঁরা হাসলে আমরাও হাসি আবার তাদের চোখে জল দেখলে আমাদেরও চোখে জল আসে। তবে তাঁদের পেশা এমনই যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল তা আমরা সবসময় বুঝে উঠতে পারিনা। ছবির প্রচারে, অ্যাওয়ার্ড ফাংশনে বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে সেলেবদের চোখের জল তুলে দেয় পাল্টা প্রশ্নও। এটা কোনও প্রচারের ফিকির নয় তো?
‘ছপাক’-এর ট্রেলার থেকে টাইটেল ট্র্যাক লঞ্চ পর্যন্ত সব ক’টি অনুষ্ঠানেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন। ট্রেলার লঞ্চের অনুষ্ঠানে তিনি এতটাই বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন যে, তাঁকে সামলাতে মেঘনা গুলজ়ার এগিয়ে আসেন। ছবির প্রচারে কোনও চরিত্রের জন্য এতটা ইমোশনাল হতে বোধহয় খুব কম অভিনেত্রীকেই দেখা গিয়েছে। শোনা গিয়েছে, লক্ষ্মী আগরওয়ালের চরিত্র করতে গিয়ে সেটেও অনেক বার ভেঙে পড়েছিলেন নায়িকা। এমনিতে দীপিকাকে যাঁরা ফলো করেন, তাঁরা জানেন জীবনের যে কোনও বিশেষ মুহূর্তের কথা বলতে গেলেই চোখ ভিজে যায় তাঁর। তা স্বামী রণবীর সিংহকে নিয়ে হোক বা বাবা প্রকাশ পাড়ুকোন।
‘ছপাক’-এর প্রচারেই টেলিভিশনের এক রিয়্যালিটি শোয়ে গিয়েছিলেন দীপিকা। সেখানে তাঁকে ট্রিবিউট জানিয়ে এক প্রতিযোগী পারফর্ম করেন। তা দেখেও ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন অভিনেত্রী। আবেগের এমন আবরণহীন প্রকাশেও সাহস লাগে। বিশেষত যাঁর প্রতিটি মুহূর্তে নজর রাখে হাজার ওয়াটের ফ্ল্যাশলাইট।
মানসিক অবসাদের কথা বলতে গিয়ে দীপিকা ভেঙে পড়েছিলেন টিভির অনুষ্ঠানে। তিনি নিজে ভুক্তভোগী। তাই কঠিন দিনগুলোর কথা সর্বসমক্ষে তুলে ধরা তাঁর পক্ষে নেহাত সহজ ছিল না। কিন্তু সম্পর্কের আগল শক্ত হলে পাশের জনের গভীর ব্যথাও নাড়া দিয়ে যায়। আলিয়া ভট্টের দিদি শাহিন মানসিক অবসাদের শিকার হয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে শাহিন একটি বই লিখেছেন। বইটির প্রকাশ অনুষ্ঠানে দু’-দু’বার কান্নায় ভেঙে পড়েন আলিয়া। ‘কলঙ্ক’-এর প্রচারে আলিয়ার কত্থকের প্রশংসা করেছিলেন তাঁর সহ-শিল্পী বরুণ ধওয়ন ও সোনাক্ষী সিংহ। সেই কমপ্লিমেন্ট পেয়েও কেঁদে ফেলেছিলেন আলিয়া।
ছবির প্রচারে দীপিকা-আলিয়ার এই মানবিক মুখের বিপরীত মেরুতে অবস্থান কঙ্গনা রানাউতের। তাঁর ছবি ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া’র প্রচারেই এক সাংবাদিকের সঙ্গে বচসা বাধে অভিনেত্রীর। দ্বন্দ্ব এতটা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, সাংবাদিকরা একজোট হয়ে কঙ্গনাকে বয়কট করেন। তার পাল্টা একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে কঙ্গনা নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। কেন তিনি ক্ষমা চাইবেন না, তা ব্যাখ্যা করেন সেখানে।
সেলেবদের আবেগের আগলহীন প্রকাশে ছবি বাড়তি মাইলেজ় পায় কি না, তা নিয়ে তর্ক উঠতে পারে। তবে অভিনেত্রীদের ইমেজ বিল্ডিংয়ে এটা হয়তো সাহায্য করে। অশ্রুভেজা পথে এক হয়ে যান পর্দার এ-পার এবং ও-পারের মানুষেরা।