বর্ধমানে বাবাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে উধাও ছেলে, মৃত বৃদ্ধের দেহ কে নেবে সেই নিয়ে টানাপোড়েন
অবশেষে মারা গেলেন সেই বৃদ্ধ নিশীথ সরকার (৮৫)। গত ৩০ ডিসেম্বর নিজেদের ছেলে ও বৌমা পরিচয় দিয়ে অসুস্থ নিশীথবাবুকে বর্ধমান শহরের সান হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে যান জনৈক বিজয় সরকার। তিনি নিজেকে একটি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হিসাবেও পরিচয় দেন। নার্সিংহোমের মালিক আলহাজউদ্দিন জানিয়েছেন, গত ৩ জানুয়ারী পর্যন্ত বিজয় সরকার এবং তাঁর স্ত্রী উভয়েই ওই বৃদ্ধের ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। কিন্তু তারপর থেকে আর তাঁরা নার্সিংহোমে আসেননি।
এমনকি তাঁদের নার্সিংহোমের খরচের বিষয়টি জানালে ছেলে হিসাবে পরিচয় দেওয়া বিজয় সরকার জানান, তিনি বেতন পেলেই টাকা মিটিয়ে দেবেন। এদিকে, নিশীথবাবুর অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে ভর্তিও করতে হয়। গত কয়েকদিন ধরে চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে, এই ঘটনার পর রীতিমত আত্যন্তরে পড়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। বারবার ফোনে সেই ছেলে হিসাবে পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। ফোন বন্ধ থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা। ইতিমধ্যে তাঁরা খবর পান ওই ব্যক্তি গলসীতে রয়েছেন। সেখানেও লোক পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেও তাঁদের কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি। এদিকে, নিয়মানুযায়ী মৃতদেহ ৩ ঘণ্টার বেশি নার্সিংহোমে রাখা যায় না। তাই বাধ্য হয়েই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ গোটা বিযষয়টি জেলাশাসক, জেলা মুখ্যস্বাস্থাধিকারিক এবং বর্ধমান থানাকে জানান।
মৃতদেহ বর্ধমান থানার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্ধমান থানা থেকে জানা গেছে, তাঁরা মৃতদেহ নিজেদের হেফাজতে নিচ্ছেন। অন্যদিকে, আলহ্বাজউদ্দিন জানিয়েছেন, এই ধরণের ঘটনা তাঁরা আগে কখনও শোনেননি। এমনকি যাঁরা ছেলে বৌমা হিসাবে পরিচয় দিয়ে নিশীথবাবুকে ভর্তি করে দিয়ে গেছিলেন সম্ভবত তাঁদের পরিচয়ও ভূয়ো। এই ঘটনায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।