দিল্লিতে হাজার হাজার মানুষের প্রতিরোধে সিএ আইনের বিরুদ্ধে মহামিছিল , নেতৃত্ব দিলেন ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ , মানুষের ব্যারিকেডেই পুলিশ সকাল থেকে চেষ্টা করেও ধরতে পারল না আজাদকে , এযেন নয়া ভারতে নতুন সত্যাগ্রহ আন্দোলন !
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-এর বিরুদ্ধে দেশের জনমত এতটাই ক্ষিপ্ত হয়েছে ১৪৪ ধারাও মানছে না । পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই আজ দেশজুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়েছে । সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি সংঘটিত হয়েছে দিল্লির জামা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় । আজ শুক্রবার জুম্মার নামাযের পর দুপুর ২টেয় পুলিশের নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে মিছিল শুরু হয় । প্রথমে পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও হাজার হাজার জনতার প্রতিরোধে কার্যত পুলিশকে হাল ছেড়ে দিতে হয় । সবচেয়ে অবাক করেছে দলিত নেতা ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের উপস্থিতি । তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য সকাল থেকে দিল্লি পুলিশ হন্যে হয়ে সমগ্র শহর ঘুরেছে । কিন্ত তিনি এলেন সংবিধান হাতে নিয়ে আম্বেদকরের পোষ্টার হাতে নিয়ে আর হাজার হাজার জনতাকে সঙ্গে নিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিলিপি হাতে নিয়ে মিছিলের নেতৃত্ব দিলেন । পুলিশ তাঁকে আটক করতে গিয়েও পারলেন না ।
এ দিনের মিছিলের জন্য পুলিশের তরফে কোনও অনুমতি মেলেনি। চন্দ্রশেখর যাতে জামা মসজিদে মিছিলে যোগ দিতে না পারেন, তার জন্য জামা মসজিদের গেটে পাহারায় ছিল পুলিশ। এক সময় চন্দ্রশেখরের আটক হওয়ার খবরও ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তার পরই চন্দ্রশেখর নিজে টুইট করে জানিয়ে দেন, ‘গুজবে কান দেবেন না। আমি যে কোনও পরিস্থিতিতে যন্তনমন্তর পৌঁছব।’
জামা মসজিদের বাইরে বেরনোর গেট বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদীদের আটকানোর চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিন্তু বিশাল জনস্রোতের সামনে পুলিশি বাধা কার্যত ভেঙে পড়ে। জামা মসজিদ থেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে মিছিল। এর কিছু পরে দরিয়াগঞ্জের কাছে চন্দ্রশেখরকে আটক করেছিল পুলিশ। তবে চন্দ্রশেখরকে আটক করে রাখতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ ভ্যানে তোলার আগে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে মিছিলে ফের তিনি ঢুকে পড়েন।সাহারণপুরে হিংসার ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তবে পরে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর গ্রেফতারিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করে চন্দ্রশেখর আজাদকে জামিন দেয়।
এযেন মনে হচ্ছে গান্ধীজির সত্যাগ্রহ আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়েছে । চন্দ্রশেখরকে এই খবর লেখা পর্যন্ত পুলিশ আর গ্রেফতার করতে পারেনি । এর কারণ একটাই মানুষ চন্দ্রশেখরকে আগলে রেখেছে । এরপরেও মোদী-শাহ যদি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার না করেন তাহলে বিক্ষোভ যে আরও তীব্র হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । জামা মসজিদের সামনে আজকের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এটা প্রমাণ করেছে স্বাধীনতার ৭২ বছরে এদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার যে বীজ বপন করা হয়েছে তাকে খুব সহজেই উপড়ে ফেলতে পারবেন না মোদী-শাহরা ।