ভূয়ো কল সেন্টার খুলে আন্তর্জাতিক নামী এক সফ্টওয়ার কোম্পানির নামে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার ১৫
ভূয়ো কল সেন্টার খুলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার ১৫ জন ।
ডিআইজি সিআইডি মিতেশ জৈন বুধবার বলেন,‘‘ আমরা ওই সফ্টওয়্যার কোম্পানির থেকে প্রথম অভিযোগ পাই। তদন্ত করতে শুরু করে আমাদের সাইবার অপরাধ দমন শাখা। মঙ্গলবার রাতে আমাদের পাঁচটি দল হানা দেয়।
মঙ্গলবার রাতভর অভিযানে সল্টলেক সেক্টর–ফাইভের এ রকম পাঁচটি কলসেন্টারের পর্দাফাঁস করেন রাজ্য সিআইডি–র আধিকারিকরা। আটক করা হয়েছে ছ’জন তরুণী–সহ ১৫ জনকে। সিআইডি সূত্রে খবর, ভিন রাজ্যের বাসিন্দারাও রয়েছেন আটকদের দলে। পরে সকালে গ্রেফতার করা হয় ৭ জনকে।
এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘ আমরা সফ্টওয়্যার সংস্থার যে অভিযোগ পেয়েছি সেখানে দেখা যাচ্ছে গ্রাহকরা একটি পপ আপ মেসেজ পেতেন নিজেদের কম্পিউটারে। সেই মেসেজে ওই আন্তর্জাতিক সফ্টওয়্যাক কোম্পানির নাম লেখা থাকত। ফলে সহজেই মানুষ বিশ্বাস করে ওই মেসেজে ক্লিক করত। ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করা শুরু করত ওই ভাইরাসে ঠাসা ম্যালওয়্যার। ওই ভাইরাসের সাহায্যে গ্রাহকের কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ চলে যেত জালিয়াতদের হাতে।” এর পরই ওই কলসেন্টার গুলি থেকে ফোন করে তোলাবাজির ঢংয়েই মোটা টাকা দাবি করা হত কম্পিউটারটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন সৈয়দ জাফর ইমাম নামে এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ইমামই গোটা চক্রের পান্ডা। তাঁর সঙ্গী বাকি ৬ জনের কি ভূমিকা ছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃত সাতজনকেই এ দিন আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রতারণা, জালিয়াতির বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যোগ করা হয়েছে তথ্য প্রযুক্তি আইনও।
সম্প্রতি এ ধরনেরই একটি প্রতারণা চক্র পাকড়়াও করেছিল কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতার করা হয়েছিল চক্রের মূল পাণ্ডা সিদ্ধার্থ বন্ঠিয়াকে। জানা গিয়েছিল, সিদ্ধার্থও ঠিক ওই পথেই ভুয়ো কলসেন্টার খুলে ইংল্যান্ডের প্রায় ২৩ হাজার গ্রাহককে প্রতারণা করেছিলেন। লন্ডন পুলিশ প্রতারকদের হদিশ না পেলেও, ওই আন্তর্জাতিক সফটঅয়্যার কোম্পানির করা অভিযোগের সূত্র ধরে কলকাতা পুলিশ শরৎ বোস রোড এবং তপসিয়ায় চলা ওই কলসেন্টারগুলোর হদিশ পায়। ওই প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করার জন্য লন্ডন পুলিশের কমিশনারও ব্যাপক প্রশংসা করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের।