ম্যাচ শেষে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে (Wembley Stadium);বাজছিল জন ডেনভারের সেই কালজয়ী গান, 'কান্ট্রি রোডস, টেক মি হোম, টু দ্য প্লেস, আই বিলং...' ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের (Manchester United) জন্য একেবারে যথার্থ গান। এককালে তারা যে মানের ফুটবল ক্লাব ছিল, যে উচ্চতায় তার 'বিলং' করত, সেই পর্যায়ে ফেরার রাস্তা কিছুতেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ২০১৩ সালে স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন (Sir Alex Ferguson) দায়িত্ব ছাড়ার পর প্রিমিয়ার লিগ (EPL) জেতা হয়নি, শেষ ট্রফি ইউরোপা লিগ তাও ছ' বছর আগে জোসে মোরিনহোর (Jose Mourinho) আমলে। চোখের সামনে দেখতে হয়েছে ম্যান সিটি, লিভারপুলের দাপট। রবিবার রাতে কিন্তু ঘরে ফেরায় রাস্তা খুঁজে পেল ম্যান ইউ। নিউকাসলের বিরুদ্ধে ২-০ জিতে কারাবাও কাপ (Carabao Cup) চ্যাম্পিয়ন হল রেড ডেভিলরা।
ইপিএলের মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়, এফএ কাপের মতো ঐতিহ্যশালী নয় কারাবাও কাপ। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না। এরিক টেন হাগের (Eric Ten Hag) হাত ধরে ম্যান ইউ (Man U) ঘরে ফেরার রাস্তায় এসে পড়েছে, এটাই আসল কথা। ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার পর টুকরো টুকরো যে সব দৃশ্য চোখে পড়ল, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট, দলের প্রত্যেককে একসূত্রে বেঁধে ফেলেছেন টেন হাগ। একতাই এই দলের শক্তি।
ম্যাচেও প্রভাব ফেলল এই একতা। এদিন কিন্তু বেশি ভালো খেলেছিল নিউকাসল (Newcastle) । বলের দখল তাদের বেশি। আক্রমণের চাপও বেশি ছিল তাদের। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে ডিফেন্স করলেন ভারানে, মার্তিনেজরা। সহায়তা করলেন ক্যাসেমিরো, ফ্রেড। এমনকী র্যাশফোর্ড, অ্যান্টনি এবং ব্রুনোও নীচে নেমে সাহায্য করলেন। এ মরশুমে আর একটা বিষয়ে উন্নতি করেছে ম্যান ইউ। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ছাড়ছে না তারা। লুক শ-এর নিখুঁত ফ্রি কিকে মাথা ছুঁয়ে ১-০ করেন ক্যাসেমিরো। ওয়েঘর্স্টের পাস ধরে শট চালান র্যাশফোর্ড, ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে তা জালে জড়িয়ে যায়। তবে দ্বিতীয় গোলটি আত্মঘাতী হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
ম্যাচ শেষে আনন্দে মাতল গোটা দল। ছয় বছর পর ট্রফি এল ক্লাবে। প্রত্যেকের মুখে একদিকে স্বস্তির ছাপ। আবার ছাপ ছিল সংকল্পের, এই ট্রফি আসলে শুরু। আরও হবে। এই মরশুমে ইপিএল বাদ দিলেও আরও দুটো ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা আছে ম্যান ইউয়ের, ইউরোপা লিগ এবং এফএ কাপ। ম্যান ইউ সমর্থকরা আশাবাদী, এতদিনে সুদিন ফিরেছে তাদের, এই বিশ্বাস জন্মেছে। আর তার কারিগর এরিক টেন হাগ।