বিজেপির সাথে হাত মেলানোয় অজিত কি আইনের প্যাঁচে?
মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফড়নবিস শপথ নেওয়ার পর থেকেই অজিত পাওয়ারকে নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তা হল বিজেপির সাথে হাত মেলানোর পর কি তাঁর বিধায়ক পদ থাকবে? নাকি তিনি আইনের প্যাঁচে পড়বেন?
সংবিধান বিশেষজ্ঞ তথা লোকসভার প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল পিডিপি আচার্যের মতে, বিজেপির সঙ্গে অজিতের হাত মেলানোর এই পদক্ষেপ তত ক্ষণই তাঁকে বেকায়দায় ফেলবে না, যত ক্ষণ না তাঁর দলে কোনও ভাঙন ধরছে। অর্থাৎ তিনি যদি দল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তবেই তাঁর পদক্ষেপ সাংবিধানিক বৈধতার গণ্ডি ছাড়াবে। পড়বেন দলত্যাগ বিরোধী আইনের প্যাঁচেও। পিডিপি আচার্য বলেন, ‘‘দলত্যাগ বিরোধী আইনটি এ ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে প্রযোজ্য। তর্কের মূল বিষয়টি হল, এনসিপি ছেড়ে অজিত পওয়ার বেরিয়ে এসেছেন কি, আসেননি? যদি তিনি দল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তবেই এই আইনটি তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।’’ দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতে কী করতে হবে তাঁকে? আচার্য জানিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে অজিতকে দেখাতে হবে তিনি অখণ্ড এনসিপিতেই আছেন।
শনিবার সাতসকালেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। রাজভবনের ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন এনসিপির অজিত পওয়ারও। তবে এই পদক্ষেপকে অজিতের ব্যক্তিগত বলে আখ্যা দেন শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোটের অন্যতম কাণ্ডারী তথা অজিতের কাকা শরদ পওয়ার। এটি যে এনসিপির সিদ্ধান্ত নয়, সে দাবিও করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বেই রাজ্যে সরকার গড়বে জোট।
তবে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা শুরু না হওয়া সত্ত্বেও কি অজিতের এই পদক্ষেপ তাঁকে বিপাকে ফেলতে পারে? আচার্য বলেন, ‘‘নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণামাত্রই নির্বাচন কমিশন তার ফলাফল নিয়ে নোটিফিকেশন জারি করে। তার পর আপনা থেকেই বিধানসভা গঠিত হয়ে যায়।’’ তিনি জানিয়েছেন, কোনও বিধায়ক যদি স্বেচ্ছায় কোনও দলের সদস্যপদ ছেড়ে দেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওই আইনের প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে এই আইন অনুসারে, স্বেচ্ছায় দল ছাড়া কিন্তু ইস্তফা দেওয়ার সমান নয়। আইনে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনও বিধায়ক তাঁর দল ছেড়ে অন্য কোনও দলে যোগ দেন, সে ক্ষেত্রে পুরনো দলের দুই-তৃতীয়াংশ বিধায়ককে নিয়েই সেখানে যেতে হবে,নইলে দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় চলে আসবেন। ফলে সে ক্ষেত্রে দলত্যাগ বিরোধী আইনের ফাঁদ এড়াতে অজিত পওয়ারকে দলের দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে, এমনটা প্রমাণ করতে হবে।