শিবসেনা এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর এবার ঝাড়খন্ডেও বড় ধাক্কা খেতে চলেছে বিজেপি । এখানেও এনডিএ জোট ভাঙনের মুখে । এই মাসের ২৫ নভেম্বর থেকে ঝাড়খন্ডে বিধানসভা নির্বাচন শুরু হবে চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত । কিন্ত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই এনডিএ জোটের মধ্যে শুরু হয়েছে সংঘাত । রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে এমন কয়েকটি কেন্দ্র আছে যেখানে এনডিএ জোটের শরীক রামবিলাশ পাশোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি বা এলজেপি এবং অল ঝাড়খন্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মুখোমুখি লড়াই করবে । তারা ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষনা করে দিয়েছে । রামবিলাস পাসোয়ান আবার ঘোষণা করেছেন, তাঁর দল একাই ভোটে লড়বে। আপাতত তিন পক্ষের নমনীয় হওয়ার কোনও ইঙ্গিতও নেই।
৮১ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ভোটগ্রহণ পাঁচ দফায়। শুরু হচ্ছে ৩০ নভেম্বর থেকে। প্রথম দফায় বিজেপি ৫২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এজেএসইউ ঘোষণা করেছে ১২টি আসনের প্রার্থী। কিন্তু তাতে দেখা যাচ্ছে, চক্রধরপুর কেন্দ্রে দুই শরিকদলই প্রার্থী দিয়েছে। এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে দলের রাজ্য সভাপতি লক্ষ্মণ গুলুয়াকে। এ ছাড়া সিমারিয়া, সিন্দ্রি এবং মাণ্ডু কেন্দ্রেও একই পরিস্থিতি।
২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে আসন রফা করে ভোটে লড়া এজেএসইউ–এর সঙ্গে বিজেপির অস্বস্তির এখানেই শেষ নয়। এজেএসইউ সূত্রে খবর, তারা অন্তত ১৯টি আসন লড়তে চায় বলে বিজেপিকে জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি তাদের ন’টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ। দলনেতা সুদেশ মাহাতোর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, তাঁরা অবস্থানে অনড়। অন্য দিকে রাজ্য বিজেপি–ও ন’টির বেশি আসন দিতে রাজি নয়। ফলে টানাপড়েন চরমে উঠেছে।
সঙ্ঘাত চরমে অন্য শরিক এলজেপির সঙ্গেও। বর্তমানে দলের দায়িত্বে রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ। তিনি স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় এ বার একাই লড়বে তাঁদের দল। ২০১৪ সালে এলজিপি–কে একটি আসন ছেড়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেটিতেও হেরেছিলেন দলীয় প্রার্থী। দলীয় সূত্রে খবর, এ বার সেখানে বিজেপির কাছে ছ’টি আসনের জন্য দরবার করেছিলেন চিরাগ। কিন্তু বিজেপি একটিও আসন দিতে রাজি নয়। তাই একক ভাবে ৩৭টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আজই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে তারা। অথচ রামবিলাস পাসোয়ান কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের মন্ত্রী। খাদ্য ও গণবণ্টন ও ক্রেতা সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক রয়েছে তাঁর হাতে।
তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা চলছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। দু’দলের সঙ্গেই আলোচনার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত আসন সমঝোতা হবে বলে আশাবাদী পদ্ম শিবির।
বিরোধী শিবিরে অবশ্য সংঘবদ্ধ চেহারাই ফুটে উঠেছে। আসন সমঝোতা নিয়ে তেমন দর কষাকষি হয়েছে, এমন খবর মেলেনি। শিবু সরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ৪৩টি, কংগ্রেস ৩১টি এবং বাকি আসনগুলিতে প্রার্থী দেবে লালুপ্রসাদের রাষ্ট্রীয় লোক দল। ইউপিএ জোটের প্রচারে নেতৃত্বে থাকছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবু সরেন।
২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৭২টি আসনে প্রার্থী দিয়ে জিতেছিল ৩৭টিতে। শরিক এজেএসইউ–এর দখলে ছিল ৫টি। একটি আসনে প্রার্থী দিলেও শিকে ছেঁড়েনি এলজেপি প্রার্থীর। অন্য দিকে জেএমএম দখলে ছিল ১৯টি আসন। ৬২ আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র ৬টিতে জয় পেয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থীরা।