অলকা ইয়াগ্নিকের লঙ ডিসটেনস রিলেশনশিপ
মাত্র ১৪ বছর বয়সে বলি ইন্ডাস্ট্রিতে গানে ডেবিউ তাঁর। দু’হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন তিনি। অন্তত ১৬টি ভাষায় গান গেয়েছেন। নব্বইয়ের দশকে তাঁর গানই মাতিয়ে রাখত দর্শকদের।
১৯৬৬ সালে কলকাতায় এক গুজরাতি পরিবারে জন্ম অলকার। তাঁর মায়ের থেকেই গান পেয়েছেন। মা শুভা এক জন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী।
মাত্র ৬ বছর বয়সে আকাশবাণী কলকাতায় গান শুরু করেন তিনি। তাঁর কেরিয়ার আজ যে জায়গায় পৌঁছেছে, তার পুরো কৃতিত্বই অলকা মা-কে দেন।
মা শুভাদেবীই তাঁকে মুম্বই নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘পায়েল কি ঝঙ্কার’ ছবিতে। তাঁর কণ্ঠ এতটাই দর্শকেরা এতটাই পছন্দ করেন যে, এর পর আর পিছনে ফিরতে হয়নি তাঁকে।
তিনি এতটাই হিট করেন যে, এক সময় লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলের সঙ্গে টক্কর শুরু হয় তাঁর। কুমার শানু এবং উদিত নারায়ণের সঙ্গে একাধিক হিট গান রয়েছে তাঁর।
গানের জগত্টা ঠিক যে ভাবে গুছিয়ে, সুপরিকল্পিত ভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন অলকা, তেমনই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ভীষণ গোছানো।
কেরিয়ারের চাপের ছায়া কখনও তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে পড়তে দেননি তিনি। তাই স্বামীর থেকে অনেক দূরে থেকেও কখনও তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়নি।
১৯৮৯-এ শিলংয়ের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন অলকা। কর্মসূত্রে বছরের বেশির ভাগ দিন অলকাকে মুম্বইয়েই থাকতে হয়। আর ব্যবসার প্রয়োজনে তাঁর স্বামী নীরজ কুমার রয়ে গিয়েছেন শিলংয়ে।
এ রকম পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ সম্পর্কেই বিচ্ছেদ আসে। অলকা-নীরজের ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয়নি। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া এমনই।
তাঁদের পরিচয় অনেকটা ফিল্মের মতোই। মায়ের সঙ্গে অলকা দিল্লি গিয়েছিলেন এক বার। স্টেশনে তাঁদের নিতে আসেন নীরজ। তাঁরা কেউই একে অপরকে চিনতেন না। নীরজ ছিলেন অলকার মায়ের বন্ধুর আত্মীয়। প্রথম দেখাতেই ভাল লেগে গিয়েছিল একে অপরকে।
সেখান থেকে বন্ধুত্ব এবং প্রেম। ব্যবসার প্রয়োজনে মুম্বই এলে অলকার বাড়িতেও আসতেন নীরজ। অলকা তখন তাঁর কেরিয়ারের একবারে শীর্ষে, তাঁর পক্ষে মুম্বই ছেড়ে শিলংয়ে গিয়ে থাকা অসম্ভব ছিল।
আর নীরজের পক্ষেও একই ভাবে ব্যবসা ছেড়ে আসা সম্ভব নয়। তাই বাড়িতে যখন তাঁরা বিয়ের কথা জানিয়েছিলেন, দুই বাড়িই তাতে রাজি হয়নি। এ বিয়ে টিকবে না, এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করেছিলেন পরিবারের লোকজন।
তাঁরা শোনেননি, সম্পর্কে বিশ্বাস রেখে আজও সবাইকে ভুল প্রমাণ করে চলেছেন অলকা-নীরজ জুটি।