বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আজব কথাবার্তা শুনে বাংলার সাধারণ মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গেছে । তাই তাঁর বক্তব্য নিয়ে খুব একটা আলোচনা ইদানিং হয় না । যিনি বলতে পারেন বিদ্যাসাগর সহজপাঠ লিখেছেন তাঁর কাছ থেকে ভাল কথা শোনা আশা করা যায় না । তবে জয়েন্টের প্রশ্ন বাংলায় কেন হবে না ? শাসক তৃণমূল দলের এই দাবির বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে দিলীপবাবু যা বললেন তাতে তাঁর বাঙালি বিরোধী মানসিকতার প্রমাণ পাওয়া গেল ।
দিলীপবাবু বলেছেন , বাংলার সরকারি স্কুলে পড়ে জয়েন্ট দেওয়া যায় নাকি ! বাংলা থেকে ক’জন জয়েন্ট দেয় ? কিন্ত দিলীপবাবুর হয়তো জানা নেই এই বাংলা থেকে যত ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার ও আইনজীবী হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশই বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করেছেন । এমনকি বাঙালি আইএএস ও আইপিএসদের একটা বড় অংশ বাংলা মাধ্যম স্কুলের ছাত্র । এমনকি নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও বাংলা মাধ্যমের ছাত্র , সদ্য নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা ভাষার জ্ঞান , বুৎপত্তি এবং লেখার সহজাত ক্ষমতা রয়েছে ।
মাননীয় দিলীপবাবু একটু খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন সমগ্র দেশের মেধা শক্তিতে বাংলার ছাত্র-ছাত্রীরা এগিয়ে । শুধু জয়েন্ট পরীক্ষার ফলাফলগুলিকে পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন দিলীপবাবু সাফল্যের নিরিখে এই রাজ্যের বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা যোজন মাইল এগিয়ে । বাংলার বিরোধিতা ছেড়ে বাংলার সন্তানদের উন্নতির জন্য আপনার মত বাঙালি বিজেপি নেতার এগিয়ে আসা উচিত । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়েন্টে বাংলা ভাষায় প্রশ্নে দাবি উত্থাপন করেছেন বলেই তার বিরোধিতা করবেন এটা না করলে দিলীপবাবুরা অনেক ভাল করবেন । মনে রাখবেন রাজনীতিতে ক্ষমতার উত্থান-পতন আছে কিন্ত বাংলা বা বাংলার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে কটু মন্তব্য করা উচিত নয় ।
মাননীয় দিলীপবাবু গরুর দুধে সোনা আছে এটা আপনি আবিস্কার করতে পারেন , এই সহজাত বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনা আপনার আছে যখন তখন সেই সহজাত প্রতিভাকে কাজে বাংলার ছেলেমেয়েদের মেধার বিকাশ নিয়ে গবেষণা করুন । তাহলে দেখতে পাবেন , আমেরিকাতে বিভিন্ন দেশের যত মেধাবী রয়েছে তাদের মধ্যে ভারত সবার প্রথমে রয়েছে । আর ভারতের যত মেধাবী রয়েছে তাদের মধ্যে প্রথমে রয়েছে বাঙালি । বাঙালি কোনো ধর্মীয় প্রতীক নয় , বাঙালি জাতি । আমরা বাঙালি জাতি হিসাবে গর্বিত । বাংলা ভাষায় জয়েন্টে প্রশ্নপত্র তৈরিতে যারা বিরোধিতা করছেন তারা আসলে বাংলার বিরোধী, বাঙালির বিরোধী।