বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ , শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্থান

Paramanik Akash
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্থানের সঙ্গে ভারতের তুলনায় করে থাকেন । দেশের আর্থিক পরিস্থিতি যখন তলানিতে তখনও মোদীর ঘনিষ্ট মিডিয়া খবর করছে পাকিস্থানে দুধের দাম নাকি ১২০ টাকা লিটার । ভারতের টাকা তুলনায় পাকিস্থানে টাকার মূল্য অনেক কম । তা সত্ত্বে এ ধরনের তুলনা করে ভারত যে পাকিস্থানের চেয়ে এগিয়ে তা বলার চেষ্টা করে থাকে । কিন্ত আসলে ভারতে তুলনা হওয়া উচিত চীন কিংবা আমেরিকার সঙ্গে । তাদের আর্থিক অবস্থা আমাদের আর্থিক অবস্থার তুল্যমূল্য বিচার করা উচিত । তা না করে গরীব দেশ হিসাবে পরিচিত পাকিস্থানের সঙ্গে আমাদেরকে তুলনা করা হয় ।
কিন্ত দুঃখের হলেও সত্য আমাদের প্রিয় দেশে এখন ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্য ময় / পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি-এর মত ক্ষুধা নিবারণে আমরা ক্রমশই পিছিয়ে যাচ্ছি । হিন্দি-হিন্দুস্থানে শ্লোগান দিতে গিয়ে নাগরিকের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা রুটি-কাপড়া-মাকান পূরণ ব্যর্থ হয়েছে মোদী সরকার । খবরে প্রকাশ ,চলতি বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০২তম স্থানে নেমে গিয়েছে ভারত। ক্ষুধার মেটানোর তালিকায় ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও চিনের পরে স্থান হয়েছে ভারতের।
অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু, পাঁচ বছরের চেয়ে কমবয়সি শিশুর উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের মতো কয়েকটি মাপকাঠিতে বিভিন্ন দেশকে বিচার করে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক। ২০১৯ সালের সেই সূচক অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুর উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের বিষয়টি (চাইল্ড ওয়েস্টিং) সবচেয়ে বেশি প্রকট ভারত, ইয়েমেন ও জিবুতিতে। ভারতে এই ধরনের ঘটনার হার ২০.৮ শতাংশ। ক্ষুধা সূচক অনুযায়ী, চাইল্ড ওয়েস্টিং-এর এমন হার তালিকায় থাকা অন্য কোনও দেশে নেই। ভারতের জাতীয় সমীক্ষার রিপোর্টও বলছে, ভারতে চাইল্ড ওয়েস্টিং-এর হার ২১ শতাংশ। ২০১৫-১৬ সালের জাতীয় জনস্বাস্থ্য সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব রাজ্যে চাইল্ড ওয়েস্টিং-এর হার বেশি সেগুলির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাত। এ ছাড়া ওই তালিকায় রয়েছে ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকের নাম।
ক্ষুধা সূচক অনুযায়ী, বিপুল জনসংখ্যার কারণে বিভিন্ন মাপকাঠিতে ভারতের পরিস্থিতির বড় প্রভাব পড়ে গোটা অঞ্চলের উপরে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে মাত্র ৯.৬ শতাংশ সুষম খাদ্য পায়। ২০১৫-১৬ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতে ৯০ শতাংশ পরিবার পানীয় জলের স্বাস্থ্যসম্মত উৎস ব্যবহার করে। ৩৯ শতাংশ পরিবারের বাড়িতে পয়ঃপ্রণালী নেই।
উন্মুক্ত স্থানে শৌচকার্য বন্ধ করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ উদ্যোগের উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্টে। কিন্তু ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন শৌচাগার তৈরি হওয়া সত্ত্বেও উন্মুক্ত
স্থানে শৌচ করা চলছে। তাতে বিশেষত শিশুদের স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে। কারণ, এতে তাদের পুষ্টিগ্রহণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ক্ষুধা সূচকে ভারতের থেকে পিছিয়ে রয়েছে মাত্র ১৫টি দেশ।
দুঃখের বিষয় হল , ক্ষুধা নিবারণে এতটা পেছনে আমরা ছিলাম না । অনেকটাই এগিয়ে ছিলাম । কিন্ত মোদী সরকারের আমলে ক্রমশ পিছিয়ে গেছি আমরা । এতটাই পেছনে রয়েছি যে , ভারতের ১০২ অবস্থান থেকে মাত্র ১৫ টি দেশ পেছনে রয়েছে । অর্থাৎ বিশ্বে আমরা ক্ষুধা নিবারণের দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দেশগুলির মধ্যে নিচের দিক থেকে ১৬ তম অবস্থানে বিরাজ করছি । আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্থান ।


Find Out More:

Related Articles: