বরফ-শীতল মানসিকতা, ফোরহ্যান্ড , ব্যাকহ্যান্ড এবং ক্রসকোর্ট, সবকটা শট আছে এই ছেলের হাতে।আজ জুনিয়র উইম্বলডনের ফাইনালে জিতে ইতিহাস গড়ে ফেললেন সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়। মাত্র ১ ঘণ্টা ২২ মিনিটে স্ট্রেট সেটে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভিক্টর লিলোভকে উড়িয়ে দিল সে। খেলার ফল ৭-৫, ৬-৩। তবে সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটু চিনে নেওয়া যাক -
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অথবা ইকোনমিক্সে ডিগ্রি নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। লেখাপড়ায় মেধাবী। নোভাক জোকোভিচের অন্ধভক্ত সমীরের বাবার বেড়ে ওঠা অসমে। মা বিশাখাপত্তনমে মানুষ হয়েছেন। কাজের সুবাদে প্রায় ৩৫ বছর আগে ওঁরা আমেরিকা পাড়ি দেন। সেখানেই সমীরের জন্ম। রয়েছে সমীরের দিদি দিব্যাও। দক্ষিণ কলকাতার লেক গার্ডেন্সে বাড়ি আছে সমীরের বাবা কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কলকাতায় এসে সাউথ ক্লাব বা দক্ষিণ কলকাতা সংসদের পরিকাঠামো ঘুরে দেখেছেন। ITF-এর জুনিয়ার্স খেলার জন্য দিল্লিতে আসর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু কোভিড সতর্কতায় তা বাতিল হয়ে যায়। আমেরিকায় সমীরের নিজের বাড়ির সামনে কয়েকটা ঘাসের কোর্ট ছিল। সেখানেই দিন-রাত কাটাত। সেই কোর্টে বল কম লাফালেও খুব দ্রুত কাছে আসত। সেখানেই অনুশীলন করত। খেলার শেষে উইম্বলডনের ওয়েব সাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সমীর বলে, “আমার প্রশিক্ষক কার্লোস এস্তেভানের স্ত্রী প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই শেষ পর্যন্ত কাকাকে সঙ্গে নিয়ে উইম্বলডন খেলতে এসেছিলাম। কাকা তো আর পেশাদার কোচ নন। তবুও শেষ মুহূর্তে আমাকে সঙ্গ দিতে চলে আসেন। তাই এ বার থেকে কাকাকে সঙ্গে নিয়েই সব জায়গায় খেলতে যাব।”
বহুদিন পর একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আবার জুনিয়র উইম্বলডন দাপালেন। ২০১৫ সালে সুমিত নাগাল ভিয়েতনামের লি হোয়াং নামকে হারিয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে শেষবার উইম্বলডন জুনিয়র ডাবলস জিতেছিলেন। ১৯৫৪ সালে প্রথমবার রমানাথন কৃষ্ণন ভারতীয় হিসাবে জুনিয়র উইম্বলডন জিতেছিলেন। এর পর ১৯৯০ সালে জুনিয়র উইম্বলডন ও ১৯৯১-তে জুনিয়র ইউ এস ওপেন জেতেন লিয়েন্ডার পেজ। সমীর চ্যাম্পিয়ন হয়ে রজার ফেডেরার, স্টেফান এডবার্গ, মনফিলসদের পাশে নিজের নাম লিখলেন। পুরস্কার নিয়ে তিনি জানিয়েছেন জেতার জন্য মানসিকভাবে নিজেকে তৈরি করে এসেছিলেন। ভবিষ্যতে টেনিস চালিয়ে যেতে চান। পাশাপাশি লেখাপড়া শেষ করতে চান।