প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল

A G Bengali
আমি নন্দীগ্রামেই লড়ছি। কথা দিলে কথা রাখি। শুক্রবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবানীপুরে প্রার্থী হচ্ছেন না। ওই আসনটি ছেড়ে দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার হাতে দলের রাশ যতটা রয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের হাতে ততটা নেই। ভোটের প্রার্থী ঘোষণার আগে তৃণমূলের অন্দরে এমন জল্পনা ঘুরছিল যে, প্রার্থী বাছাইয়ে শেষকথা বলবেন অভিষেক-প্রশান্ত জুটিই। কিন্তু যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে মমতার ‘হাতযশ’ই প্রধান। এটা ঠিক যে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিষেক-প্রশান্ত জুটির সুপারিশ মানা হয়েছে।
যে সমস্ত বিধায়ক তাঁদের পুরোন আসনে দাঁড়াতে চাননি, তাঁদের সঙ্গে কোনও আপসে যেতে চাননি মমতা। যেমন দক্ষিণ কলকাতা বাসিন্দা এক বিধায়ক নেত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁর গ্রামীণ কেন্দ্র থেকে সরিয়ে এনে তাঁকে যেন কলকাতার ৪০-৫০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি কেন্দ্রে টিকিট দেওয়া হয়। কারণ, তাঁর কেন্দ্রটিই প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করা কঠিন। মমতা তাতে কর্ণপাত করেননি। এবং শেষপর্যন্ত প্রার্থিতালিকায় ওই বিধায়ককে রাখেননি। কিছু বিধায়ককে বাদ দেওয়া হয়েছে অসুস্থতা এবং বয়সের কারণে। অনেকে আবার লোকসভা ভোটের নিরিখে বিপুল ভোটে বিজেপি-র চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন। অনেকের জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন ছিল। স্থানীয় স্তরে অভিযোগও ছিল। অনেকে ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েছিলেন বলেও খবর পৌঁছেছিল কালীঘাটে। যেমন নদিয়ার এক বিধায়ককে বাদ দেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক ব্যর্থতা এবং নিষ্ক্রিয়তার কারণে। আবার রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রীকেও বাদ দেওয়া হয়েছে একই কারণে। অপর এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁর জীবনযাপন নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ থাকায়। রায়দিঘির বিধায়ক দেবশ্রী রায়কে এবার টিকিট দেওয়া হয়নি। কারণ, কিছুদিন আগেই দেবশ্রী জানিয়েছিলেন, তিনি আর রায়দিঘিতে দাঁড়াতে চান না। দলকে বলেছেন অন্য কেন্দ্র দিতে। প্রার্থিতালিকা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দেবশ্রীর আবেদন মানেনি দল। অন্য কেন্দ্র দেওয়া তো দূরের কথা! তাঁকে তালিকা থেকেই ছেঁটে ফেলা হয়েছে। বাদ পড়ে অনেকে ভেঙে পড়েছেন। অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
২০১১ সালে ভবানীপুর আসনটি জিতেছিলেন সুব্রত বক্সি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে আসা দরকার ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। দলনেত্রীর জন্য ভবানীপুর আসনটি ছাড়েন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। উপনির্বাচনে জয়লাভ করেন মমতা। গত বিধানসভা ভোটে ২৫ হাজারের বেশি ভোটে দ্বিতীয়বার জেতেন মমতা। তবে লোকসভা ভোটের ফলাফল ধরলে ওই কেন্দ্রে মাত্র ৩১৬৮ ভোটে এগিয়ে মমতার দল। এই প্রসঙ্গ তুলেই মমতাকে বিঁধেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ভবানীপুরে হারবেন বলেই নিরাপদ আসন খুঁজছেন মমতা।

Find Out More:

Related Articles: