মত বদলাচ্ছে , অচ্ছুৎ থাকছেনা কংগ্রেসও
রাজ্য সম্মেলনের প্রস্তাবে কংগ্রেসকে প্রায় অচ্ছুৎই করে রাখা হয়েছিল।কিন্তু লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর নিজেদের কট্টর অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। দলের রাজ্য কমিটিতে প্রাথমিক পর্ব সেরে রাখার পরে সেপ্টেম্বরে রাজ্য কাউন্সিলের অধিবেশনে নিজেদের ‘নতুন অবস্থান’ চূড়ান্ত করবে তারা।
সমঝোতা করে কংগ্রেসের জন্য আসন ছেড়ে দিতে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেই বিস্তর আপত্তি তুলেছিল ফ ব। এ বার লোকসভা ভোটের আগে সিপিএম নেতৃত্ব কংগ্রেসের হাত ধরতে চাইলেও ফ ব নেতারা তাতে রাজি ছিলেন না। ভোটে শেষমেশ প্রায় অস্তিত্বই হারাতে হয়েছে এই বাম শরিক দলকে। বিপদ বুঝে ভোটের পর থেকে সুর নরম করে ফেলেছেন নরেন চট্টোপাধ্যায়, হাফিজ আলম সৈরানিরা। ব্যারাকপুরে শুক্রবারই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের পাশাপাশি যৌথ মিছিলে হেঁটেছেন নরেনবাবু। আলিমুদ্দিনে গিয়ে চার বাম দলের বৈঠকে তাঁরাই প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কংগ্রেসকে নিয়ে সরাসরি নতুন মঞ্চ গড়ে এখন কর্মসূচি নিয়ে এগোনো হোক। নিজেদের দলেও তাই কংগ্রেস-প্রশ্নে অবস্থান বদলাতে হচ্ছে তাঁদের।
ভোটের ফল পর্যালোচনার জন্য ফ ব-র রাজ্য কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব দলকে সঙ্গে নিয়ে চলার পথ খুলতে হবে। এই প্রয়োজনীয়তার কথা দিল্লিতে সদ্য হয়ে যাওয়া দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও অনুমোদিত হয়েছে। রাজ্য কমিটিতে ঠিক হয়েছে, আগামী ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য কাউন্সিলের অধিবেশনে গত সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ‘পুনর্বিবেচনা’ করা হবে। দুই সম্মেলনের মাঝে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হলে কাউন্সিলের অধিবেশন ডাকতে হয়। বাম জমানায় ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট ‘একা লড়া’র সিদ্ধান্ত বোলপুরের রাজ্য কাউন্সিল থেকে নিয়েও পরে কলকাতায় রাজ্য কমিটির বৈঠকে তা ফিরিয়ে নিয়েছিলেন ফ ব-র তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ।
ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বর্তমান পরিস্থিতির জন্য উপযুক্ত নয়। সেই বিষয়েই রাজ্য কাউন্সিলে আলোচনা হবে।’’ মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্রের প্রভাব থেকে বেরিয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের দেখানো ভারতীয় সমাজতন্ত্রে জোর দিতে চেয়ে দলের গঠনতন্ত্র ও পতাকাও পরিবর্তন করবে ফ ব।