ঘর বাঁধলেন দীপঙ্কর ও দোলন
২২ বছরের বেশি সময় ধরে একসঙ্গে রয়েছেন দোলন রায় এবং দীপঙ্কর দে। না, আইনি স্বীকৃতি ছিল না এতদিন। অবশেষে আইনের চোখেও এক হলেন তাঁরা। মাঘের শুরুতেই বিয়ে করে ফেললেন দীপঙ্কর-দোলন।
দীপঙ্করের বয়স ৭৫, দোলন ৪৯। অঙ্ক কষলে দেখা যাবে, বয়সের ফারাক ২৫ বছরেরও বেশি। কিন্তু তাতে থোড়াই কেয়ার দু’জনের। কথায় বলে না, এজ ইজ জাস্ট আ নাম্বার। আর সেই কথাকেই যেন বাস্তবে রূপ দিলেন দীপঙ্কর-দোলন
হাইল্যান্ড পার্কের পাশে এক হোটেলে শুক্রবার রাতে বসেছিল বিয়ের আসর। না, টোপর পরে, জাঁকজমকের বিয়ে করেননি তাঁরা। আয়োজন ছিল সামান্যই। দু’জনের কাছের বেশ কয়েকজন বন্ধু এবং পরিবারের লোকেরা।
টোপর না পড়লেও সাদা পাঞ্জাবি-পাজামাতে দীপঙ্কর কিন্তু এখনও এক্কেবারে ইয়ং। বরের সঙ্গে পুরোদস্তুর পাল্লা দিলেন দোলনও। কনের সাজে তিনিও অপরূপা।
দোলন পরেছিলেন লাল রঙা বেনারসী। ঘটি হাতা ব্লাউজ। মাথা ভর্তি সিঁদুর। লাল রঙের টিপ। সঙ্গে ছিল মানানসই গয়না।
ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সামনেই দু’জনের সম্মতিতে রেজিস্ট্রিতে সই করলেন ওঁরা। হল মালাবদলও। সদ্য বিয়ে হওয়া বর-কনের মুখে তখন হাসিআরধরে না! মনে পরে গেল কি পুরনো দিনের কথা? প্রেমের সেই প্রথম দিনের কথা?
দীপঙ্কর আর দোলন যে সময়টায় লিভ-ইন শুরু করেছিলেন সে সময়ে লিভ-ইনের এতটা চল ছিল না। একে বয়সের এতটা ফারাক তার মধ্যে দোসর লিভ-ইন। নানা সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ওঁদের। দীপঙ্কর তখন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা আর দোলন সবে কেরিয়ার শুরু করেছেন। শুনতে হয়েছিল নানা কটু কথা। ইন্ডাস্ট্রির ভেতরেও তখন হাজার গসিপ।
দোলন নিজেই এক বার বলেছিলেন, “আমি যা পাপারাৎজির মুখ থেকে শুনেছি, তা বোধ হয় কোনও প্রথম সারির নায়িকাকেও শুনতে হয়নি। গাড়ির কাচ ইট মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আমি তখন ভিতরে ছিলাম।”
বয়স তখন অল্প। তা সত্ত্বেও এত বছর ধরে ভালবাসা টিকিয়ে রাখতে পাড়ার ম্যাজিকটা কী? দোলন বলছিলেন, “সততা। পরস্পরের প্রতি নির্ভরতা আর বিশ্বাস।’’ বলছিলেন, এত বড় অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও কাজের ব্যাপারে দোলনের উপর কোনও দিন কিছুই চাপাননি দীপঙ্কর।
অতঃপর দীর্ঘ প্রেমে লাগল আইনের শিলমোহর। প্রায় সকলের অগোচরে এক শীতের রাতে দীপঙ্কর আর দোলন বাঁধলেন ‘নতুন’ ঘর।