সাঁঝবাতির রূপকথা

Biswas Riya

পাওলি দামের সম্বন্ধে দেবের খোলাখুলি মন্তব্য ‘ভাল শট দেওয়ার জন্য যে কী ঝগড়া করতে পারে ও, ভাবা যায় না’।সেই সময় মুখে সলজ্জ হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় পাওলিকে। দেবের বক্তব্য তিনি অনেক দিন ধরেই পাওলির নীরব গুণগ্রাহী। অনেক দিন ধরেই দেব ভাবছিলেন যদি একসঙ্গে জুটি বেঁধে কোনও ছবিতে অভিনয় করা যায়। অবশেষে সেই সুযোগ হাজির। আগামী ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে দেব ও পাওলি দাম অভিনীত ‘সাঁঝবাতি’। শুক্রবার প্রকাশ পেল ছবির ট্রেলর। সেই উপলক্ষে নন্দন-২-এ একসঙ্গে দেখা গেল দেব ও পাওলি দামকে। এই প্রথম একসঙ্গে নায়ক-নায়িকার ভূমিকায় কোনও ছবিতে অভিনয় করছেন তাঁরা।

লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এই ছবিতে ‘পোস্ত’ এবং ‘বসু পরিবার’-এর পরে আবার একসঙ্গে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও লিলি চক্রবর্তী। জীবনসায়াহ্নে পৌঁছে যাওয়া এই দু’জনকে ঘিরেই জ্বলে ওঠে সাঁঝবাতি। একাকিত্বের দমকা বাতাস থেকে সেই বাতিকে ঘিরে রাখেন চাঁদু আর ফুলি। প্রৌঢ়া সুলেখার (লিলি চক্রবর্তী) দেখভালের জন্য দুই কর্মী। সুলেখার ছেলেরা বিদেশে কর্মরত। মায়ের নিঃসঙ্গতা এবং আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য, কোনও দিকেই অভাব রাখেননি তাঁরা।

বৃদ্ধা সুলেখার নিঃসঙ্গতা দূর করার অন্যতম কারিগর তাঁর পুরনো পড়শির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চ্যাটার্জি । চাঁদু আর ফুলির কাছে ‘ছানা দাদু’। খিটখিটে প্রৌঢ়া সুলেখা, সহমর্মী ছানাদাদু আর তাঁদের সবেধন নীলমণি চাঁদু ফুলিকে নিয়ে উজ্জ্বল হয় সাঁঝবাতি। পরিচালকরা জানালেন, জীবন থেকেই উঠে এসেছে এ ছবির প্রতিটি চরিত্র।

গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সন্তু মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সেনগুপ্ত এবং সুদীপ মুখোপাধ্যায়। প্রযোজনা করেছেন অতনু রায়চৌধুরী। তাঁর সংস্থা ‘বেঙ্গল টকিজ’-এর প্রথম নিবেদন ‘সাঁঝবাতি’। ছবির সম্পাদক সুজয় দত্তরায়, ডিওপি শীর্ষ রায় এবং সঙ্গীত পরিচালক অনুপম রায়।

ছবিতে দেবকে নেওয়ার ব্যাপারে একদম সায় ছিল না তাঁর। নির্দ্বিধায় বললেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে এ-ও জানাতে ভুললেন না, ‘‘ছবির কাজ শেষ হওয়ার পরে উপলব্ধি করলাম চাঁদুর চরিত্র দেব ছাড়া সম্ভব হত না। দেবকে না দেখলে জানতে পারতাম না এক জন অভিনেতা কী ভাবে নিজেকে ভেঙেচুরে গড়ে নিতে পারে। দেবের গ্রহণযোগ্যতা দেখে আমি মুগ্ধ। সুপারহিরো দেবের কাছে আমাদের মতো নবীন পরিচালকরা প্রতি মুহূর্তে শিখেছি।’’

দেব নিজে কেন চাঁদু সাজতে রাজি হলেন? ‘চাঁদের পাহাড়’ জয়ী পর্দার শঙ্কর জানালেন, এ ছবির চিত্রনাট্যের টানে তিনি রাজি হয়েছেন। চিত্রনাট্যে মুগ্ধ পাওলি নিজেও। বললেন, ‘ফুলির মতো চরিত্রে এর আগে অভিনয় করিনি। এ রকম একটি হাসিখুশি ভূমিকায় অভিনয় করে আমার খুব ভাল লেগেছে।’ সেইসঙ্গে পাওলির ভাল লেগেছে এই ছবির সামাজিক বার্তা।

‘সাঁঝবাতি’ ভাল লাগবে দর্শকদেরও। দাবি, নির্মাতাদের। তাঁদের কথায়, অনুভূতি, উপলব্ধি, স্মৃতি আর অপেক্ষা মিলেমিশে যায় এই ছবির গল্পে। যে কাহিনি আসলে গল্প হলেও সত্যি নাগরিক জীবনের কোণায় কোণায়। যে কোণায় অপেক্ষার প্রহর গোনেন সুলেখারা। সাঁঝবাতির আলোয় শৈশবের রূপকথায় ফিরে যাবেন বলে।

 

 

 

 

Find Out More:

Related Articles: