পঞ্চসায়র গণধর্ষণ কান্ডে যুক্ত নাবালকের বিচার প্রক্রিয়া সাবালক আইনে করার আর্জি জানাল কলকাতা পুলিশ
পঞ্চসায়র গণধর্ষণ কান্ডের গুরুত্ব এবং অপরাধের দিকটি বিচার করে গ্রেফতার হওয়া নাবালকের বিচার সাবালক আইনের করার আর্জি পেশ করল কলকাতা পুলিশ । যা এক কথায় নজীরবিহীন ।
দিল্লিতে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরে খুন ও গণধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ধৃতের বয়স ১৬ বছরের বেশি হলেই তাকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার দাবি উঠেছিল। কেন্দ্রও সেই মর্মে আইন সংশোধন করেছে। তবে এর আগে এ রাজ্যের কোনও ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত নাবালককে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার দাবি পুলিশ জানিয়েছিল কি না, মনে করতে পারেননি অনেকেই।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, এটাই প্রথম। ঘৃণ্য অপরাধের কথা মাথায় রেখে এই নাবালকই প্রথম, যাকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার আর্জি জানানো হল।’’
লালবাজার সূত্রের খবর, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড কলকাতা পুলিশের ওই আবেদন গ্রহণ করেছে। আগামী পাঁচ ডিসেম্বরের মধ্যে কলকাতা পুলিশকে বোর্ডের কাছে ওই নাবালকের আর্থ-সামাজিক এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রিপোর্টে দেখা হবে, ধৃত নাবালকের অবস্থান তার পরিবারে এবং সমাজের ঠিক কোন জায়গায়। দেখা হবে, কোন স্তরের মানুষের সঙ্গে সে মেলামেশা করে এবং নানা বিষয় সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া কতটা সাবালক সুলভ।’’ সেই সঙ্গে আজ, শুক্রবারই আদালতে অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দির দিন পাওয়া গিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
লালবাজার জানায়, জেরায় ট্যাক্সি চালক উত্তম বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেও নাবালক তা করেনি। সে জানিয়েছে, প্রথমে উত্তম এবং পরে সে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে। গত ১১ নভেম্বর ঘটনার দিন সকাল থেকেই উত্তমের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল কালু। বিকেলে যে যার বাড়ি চলে গেলেও সন্ধ্যায় মদ্যপান করবে বলে ফের তারা দেখা করে। উত্তম যখন মহিলাকে গাড়িতে তোলে, তখন গাড়ির পিছনের আসনেই বসে ছিল ওই নাবালক। নানা জায়গায় ঘুরে শেষে কাঠিপোতা এলাকায় পৌঁছে দু’জনে মিলে ধর্ষণ করার পরে এক জায়গায় মহিলাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় তারা। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘ধৃতেরা সম্ভবত বুঝেছিল, পুলিশ তাদের খুঁজছে। উত্তম জেরায় বলেছে, গত ১৩ নভেম্বর কাঠিপোতা এলাকায় পুলিশ যখন তদন্ত চালাচ্ছে, সে গোটাটা দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছে।’’
তদন্তকারীরা জানান, নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে স্কুল ছেড়ে দিয়েছিল ওই নাবালক। সে কাঠিপোতা এলাকাতেই ভ্যানরিকশা চালাত। তার বাবা জমিতে মাটি কাটার কাজ করেন। পরিবারে এ ছাড়াও রয়েছেন তার দাদা এবং মা।