ভারতে করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যু কর্ণাটকে

Biswas Riya

কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বি শ্রীরামুলু  জানিয়েছেন যে কর্নাটকে ছিয়াত্তর বছর বয়সি যে-বৃদ্ধের গত মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।ভারতে এই প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। কর্নাটক সরকার জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধের লালারস পরীক্ষায় নোভেল করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও বিবৃতি দিয়ে ওই মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। ঘটনাচক্রে, আজই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন, করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না।

 

 

কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টুইট করে বলেছেন , ‘‘কলবুর্গীর বাসিন্দা ৭৬ বছরের ওই বৃদ্ধ দু’দিন আগে মারা যান। সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। পরীক্ষায় তার প্রমাণ মিলেছে।’’ কলবুর্গীর বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব থেকে ফিরেছিলেন। হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে তাঁর পরীক্ষাও হয়েছিল। সেই সময় তাঁর দেহে সংক্রমণের কোনও ইঙ্গিত ছিল না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত ৬ মার্চ ওই বৃদ্ধের জ্বরের উপসর্গ ও সর্দি-কাশি হয়। ওই দিনই তাঁকে বাড়িতে গিয়ে দেখে আসেন এক জন চিকিৎসক। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘৯ মার্চ অবস্থার অবনতি হলে কলবুর্গী জেলার একটি হাসপাতালে বৃদ্ধকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়, বৃদ্ধ করোনা-আক্রান্ত। ৯ মার্চই বৃদ্ধের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়।’’ ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, রিপোর্ট পাওয়ার আগেই চিকিৎসকদের মতামত উপেক্ষা করে ওই বৃদ্ধকে কলবুর্গীর হাসপাতাল থেকে হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যেরা। সেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরে গত মঙ্গলবার ওই বৃদ্ধকে যখন কলবুর্গীর গুলবর্গা ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তিনি রাস্তায় মারা যান। কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধের পরিজন এবং তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে যাঁরা দেখা করতে গিয়েছিলেন, তাঁদের খোঁজ চলছে। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের কোয়ারেন্টাইন করা হবে। বৃদ্ধ যে হায়দরাবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তা জানানো হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে প্রশাসনকেও। 

 

 

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলছেন, ‘‘পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে নজিরবিহীন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’’ দিল্লি ও হরিয়ানা সরকার করোনা-সংক্রমণকে মহামারি ঘোষণা করেছে। দিল্লিতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ ও সিনেমা হল বন্ধ। কাল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে করে ইরান থেকে ১২০ জনকে দেশে ফেরানো হচ্ছে। জয়সলমেরে সেনার তত্ত্বাবধানে তাঁদের কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হবে। 

 

 

প্রধানমন্ত্রী টুইট করেছেন,  ‘‘সরকার সতর্ক। সকলকে সুরক্ষিত রাখতে বিভিন্ন মন্ত্রক ও রাজ্যগুলি বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভিসা বাতিল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সতর্ক থাকুন। আপাতত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বিদেশ যাবেন না। দেশবাসীকেও প্রয়োজন ছাড়া কোথাও না-যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ রুখতে ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বড় জমায়েত এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’’ 

 

 

Find Out More:

Related Articles: