মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে আদিত্য ঠাকরে মেনে নিতে হবে বিজেপিকে ? তা না হলে অন্যপথ কি হতে পারে ?

Paramanik Akash
 এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার বিজেপিকে মহারাষ্ট্রের মসনদ থেকে সরিয়ে রাখতে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের পুত্র আদিত্য ঠাকুরকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন দিতে তৈরি বলে শিবসেনাকে সন্দেশ পাঠিয়েছেন । এই খবর বাংলার মিডিয়া জগতেই আমরা প্রথম করেছিলাম আমাদের খবরের সত্যতা নিয়ে আর কোনো সন্দেহ রইল না । কারণ আজ শনিবার শিবসেনার সংসদীয় দলের বৈঠকের পর বিজেপিকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে ফিফটি ফিফটি সমঝোতা মেনে নিতে হবে । তা না হলে তারা ‘ অন্য পথ ’ দেখবে ।
সংসদীয় দলের বৈঠকের পর শিবসেনা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজেপিকে বলেছে , শুধুমাত্র কথায় আর চিড়ে ভিজবে না , এবার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে । অমিত শাহ কিংবা দেবেন্দ্র ফরেণবীশের মত নেতাকে লিখিতভাবে আমাদের প্রস্তাব সম্পর্কে মতামত জানাতে হবে । যদি আমাদের প্রস্তাব বিজেপি না মানে তাহলে অন্যপথে ক্ষমতা দখল করবে শিবসেনা । অন্যপথ বলতে আসলে কংগ্রেস –এনসিপি জোটের কথা বলা হয়েছে । জানা গেছে , শারদ পাওয়ার প্রস্তাব মত শিবসেনাকে কংগ্রেসও মৌন সমর্থন দিতে রাজি হয়েছে । একইভাবে বিএসপি সহ নির্দলদের কম করে ১০ জন বিধায়কের সমর্থন আদিত্য ঠাকরে পেতে পারে বলে সূত্রের খবর ।
রাজ্যের মোট ২৮৮ আসনের মধ্যে বিজেপির দখলে রয়েছে ১০৫টি, শিবসেনার ঝুলিতে ৫৬ আসন। মোট ১৬১। ম্যাজিক ফিগার ১৪৫ থেকে বেশ কয়েকটাই বেশি। কিন্তু গত বারের তুলনায় দুই শরিকেরই আসন সংখ্যা এ বার কমেছে। শিবসেনার কমেছে ৭, বিজেপির কমেছে ১৭। অন্য দিকে কংগ্রেসের জোট এ বার ১০০ ছাড়িয়েছে। এই সব অঙ্ক কষেই, ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মেরেছে শিবসেনা।
এদিনের বৈঠকের পর শিবসেনা নেতা প্রতাপ সরনায়েক বলেন, ‘‘উদ্ধবজি বিজেপির উচ্চতম নেতৃত্বের থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি চান। তিনি অমিত শাহ হতে পারেন বা দেবেন্দ্র ফড়ণবীশও হতে পারেন। বিজেপিকে ৫০-৫০ ফরমুলায় বিশ্বাস রাখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর পদ দু’দলের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করতে হবে।’’ অর্থাৎ, মোট পাঁচ বছরের শাসন কালে মধ্যে আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে চাইছে শিবসেনা। এদিন শিবসেনা বিধায়ক প্রতাপ সরনায়েক স্পষ্ট করে বলেছেন , মহারাষ্ট্রে প্রথম আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবে শিবসেনা দলের , আর  আড়াই বছর পর মুখ্যমন্ত্রী হবে বিজেপি থেকে ।
পদ্মশিবির শর্ত না মানলে তাঁরা অন্য কারও হাত ধরতেও প্রস্তুত, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন শিবসেনা বিধায়ক প্রতাপ সরনায়েক। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি যদি আমাদের দাবি না মানে, তা হলে আমাদের কাছে অন্য পথও খোলা রয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা সেই অবস্থায় রয়েছি।’’ এই ‘অন্য পথ’ বলতে কী বোঝাতে চান, তা অবশ্য খোলসা করেননি তিনি। তবে এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্র বিধানসভার যে অঙ্ক, তাতে বিজেপিকে বাদ দিয়েও সরকার তৈরি হওয়া সম্ভব। শরদ পওয়ারের এনসিপি (৫৪ আসন) ও কংগ্রেস (৪৪ আসন) মিলে মোট ৯৮টি আসন রয়েছে। এই জোটের অন্য তিন শরিক পেয়েছে চারটে আসন। তাতে শিবসেনার ছাপ্পান্ন আসন যোগ হলে তা অনায়াসেই ম্যাজিক ফিগার ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে শেষ পর্যন্ত শরদ পাওয়ারে রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় বিজেপি –শিবসেনার জোটে ভাঙন ধরে কিনা সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে দেশবাসী । তবে একথা স্বীকার করতেই আগামী ৫ বছর মহারাষ্ট্রে যে বিজেপি দল চাপে থাকবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই ।


Find Out More:

Related Articles: