বুলবুলে মৃতদের দু লাখ টাকা , ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলিকে আবাস যোজনায় , ফসল বীমার আওতায় আনার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Paramanik Akash
ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার খুব ভাল কাজ করেছে বলে কেন্দ্র সরকার প্রশংসা করেছে । আজ কাকদ্বীপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করার সময় এই খবর জানান ।
সোমবার সকালে আকাশপথে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত নামখানা-বকখালি-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখার পর, কাকদ্বীপে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই মমতা জানান— কেন্দ্রীয় একটি পর্যবেক্ষক দল রাজ্যে আসছে। তাদের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন জেলা আধিকারিকদের। বুলবুলে মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে পাশে নিয়ে তিনি জেলার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খতিয়ান চান মমতা। হেলিকপ্টার থেকে দেখা অভিজ্ঞতা থেকে বলেন— উপকূলবর্তী এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পান এবং ধান উপকূলবর্তী এলাকায় ১০০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমির কতটা ফসলবিমার অন্তর্ভুক্ত, তা জেলা কৃষি আধিকারিকদের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে জানানো হয় এই পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর। অর্থাৎ মোট কৃষিজমির অর্ধেকের ফসল বিমার অন্তর্ভুক্ত। শোনার পর তিনি ১০০ শতাংশ জমি ফসলবিমার অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেন।
ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দ্রুত সারানোরও নির্দেশ দেন মমতা।তিনি বলেন, ‘‘ দেখতে পেলাম সমুদ্রতট এলাকা ব্যাপক ভেঙেছে। অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। অবিলম্বে সেই বাঁধ সারান।” তিনি সেচ দফতরকে বন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে বাঁধ বাঁচাতে ম্যানগ্রোভ লাগাতেও বলেন। গোটা এলাকার ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর উপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে জানান, আপাতত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গোটা রাজ্যে ৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তবে সেই সংখ্যাটা বেড়ে ১০ লাখ পর্যন্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যে প্রায় ২ লাখ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি সেই বাড়ি বাংলা আবাস যোজনায় তৈরি করার নির্দেশ দেন।
বৈঠকে জেলা আধিকারিকদের দ্রুত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত গোসাবা, সাগর, বাসন্তী, নামখানার মতো ব্লকগুলোতে গাড়ি করে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদ্যুত্ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা আধিকারিকরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন— ২১ টি সাব স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৬ হাজার বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। এখনও সাত-দশদিন সময় লাগবে গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে। মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় যুবকদের ১০০ দিনের কাজের আওতায় এনে বিদ্যুৎ কর্মীদের সহায়ক হিসাবে কাজে লাগানোরও নির্দেশ দেন। ঠিক একই ভাবে ১০০ দিনের কাজের খাত থেকেই গ্রামে জমা জল পরিষ্কার করা এবং গাছ কাটা ও পুকুর পরিষ্কার করার কাজে যুক্ত করার কথা বলেন। জমা জল পুরো বের করতে প্রায় দু’মাস সময় লাগবে বলে আধিকারিকদের অনুমান।


Find Out More:

two

Related Articles: