সংরক্ষণের অভাবে রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজ যাচ্ছে বাংলাদেশে , ফলে সংকট তৈরি হচ্ছে !

Akash Paramanik

পেঁয়াজের সংরক্ষণের ব্যবস্থা এই রাজ্যে থাকলে তাহলে রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে ভালভাবে চলে যেত । মহারাষ্ট্রের মতোও করা যেত, তা হলে এই দুর্দিনের মুখ দেখতে হত না রাজ্যবাসীকে। বরং এই সঙ্কটের সময়ে ত্রাতার ভূমিকা নিতে পারত ‘বাংলার পেঁয়াজ’। এমনটাই মত, এ বঙ্গের পেঁয়াজ চাষি ও ব্যবসায়ীদের একাংশের।
সারা দেশে পেঁয়াজের যে চাহিদা, তার একটা বড় অংশ আসে মহারাষ্ট্র থেকে। এ রাজ্যের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। পশ্চিমবঙ্গের ৭০ শতাংশ পেঁয়াজ আসে মহারাষ্ট্রের নাশিক থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ দক্ষিণ ভারত থেকে আসে। কিন্তু এ রাজ্যেও তো পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। রাজ্যের চাহিদা মেটাতে তার ভূমিকা কী? সরকারি টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য জানাচ্ছেন, প্রতি বছর এ রাজ্যে ৮ লক্ষ মেট্রিক টনের কাছাকাছি পেঁয়াজ লাগে। এখন বিভিন্ন জেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন হয় প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন। অর্থাৎ রাজ্যে তিন লক্ষ মেট্রিক টন ঘাটতি।

কিন্তু পেঁয়াজ চাষিদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের যা চাহিদার প্রায় সবটাই ভিন্‌রাজ্য থেকে আমদানি করা হয়। কারণ, এ রাজ্যের সিংহ ভাগ পেঁয়াজই রফতানি করা হয় প্রতিবেশী বাংলাদেশে। কী বলছেন ওই চাষির? তাঁদের দাবি, আগে হুগলি, নদিয়া, বাঁকুড়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় পেঁয়াজ চাষ হত। এখন প্রায় সব জেলাতেই কম-বেশি পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। সে কারণে উৎপাদনের পরিমাণও বেড়েছে। কিন্তু চাষ করলেই তো হল না, ওই পেঁয়াজ সংরক্ষণও তো করতে হবে!
 
এ বছর যে হেতু মহারাষ্ট্র বৃষ্টি-বন্যার কারণে পেঁয়াজ তেমন ভাবে পাঠাতে পারছে না, তাই এ রাজ্যের বাসিন্দারা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহতে ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনছেন। শনিবারও পোস্তা-বড়বাজারে ১০০ টাকার আশপাশে পাইকারি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। ফলে খুচরো বাজারে দাম কমার নাম নেই। কবে যে দাম কমবে, তার নিশ্চয়তাও দিতে পারছে না রাজ্য। কেন্দ্রের ঘাড়ে বন্দুক রাখছে তারা। এ রাজ্যের সরকারের গড়ে দেওয়া টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘আগে থেকে কেন্দ্রের কড়া পদক্ষেপ করা উচিত ছিল। কারণ নাশিকের অনেক ব্যবসায়ী বন্যার দোহাই দিয়ে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছে। চাষিরা দাম পাননি, সে রাজ্যে। কিন্তু পেঁয়াজের বড় ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে মুনাফা লুটছে। কেন্দ্রের নজরদারি কোথায়? উল্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলছেন, আমি তো পেঁয়াজ খাই না। কিন্তু আম আদমি তো খায়। সেটা ওঁরা বুঝছেন না।’’
 
এই পরিস্থিতি গোটা ডিসেম্বর মাস জুড়েই চলবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। কমলবাবু জানাচ্ছেন, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে চলছে টাস্ক ফোর্স এবং এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের নজরদারি। কিন্তু, বাংলার পেঁয়াজকে নিয়ে সরকারি কোনও ভাবনার কথা শোনাতে পারছেন না কেউই।

Find Out More:

Related Articles: