স্পন্সরের অভাবে কালঘাম ছুটছে উদ্যোক্তাদের

Biswas Riya

কালীপূজো আসতে হাতে মাত্র আর চারদিন বাকি। আমহার্স্ট স্ট্রিট, কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে বিখ্যাত একটি পুজোর আটটি গেটের মধ্যে চারটেরই এখনও বিজ্ঞাপন জোগাড় হয়নি! কয়েকটি সংস্থা মৌখিক আশ্বাস দিয়ে রাখলেও আগে যা টাকা পাওয়া যেত, তা এ বার মিলবে না বলে আশঙ্কা পুজো উদ্যোক্তাদের। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা ধনঞ্জয় ধর বললেন, ‘‘লোকে কলকাতার কালীপুজো বলতে ফাটাকেষ্টর এই পুজোই বোঝে। আমাদের কমিটির আসল নাম যে নব যুবক সঙ্ঘ, তা-ও অনেকে জানেন না। এ বার আমাদেরই এই হাল হলে বাকিদের কী অবস্থা হচ্ছে ভাবুন!’’

এই ফাটাকেষ্টর পুজোর সঙ্গেই এক সময়ে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলত আমহার্স্ট স্ট্রিটের সোমেন মিত্রের (ছোড়দা) পুজোর। এ বার সেই পুজোর জৌলুসও অনেকটাই কম। সেখানকার পুজো উদ্যোক্তা বাদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই বিজ্ঞাপনের গেট করা বন্ধ করে দিতে হয়েছে আমাদের। এ বারও আমাদের আট থেকে ১০ লক্ষ টাকা মতো বাজেট কমাতে হয়েছে।’’ সোমেনবাবু নিজেও বললেন, ‘‘দেশজুড়ে যা চলছে, এটা তারই প্রভাব।’’

 দুর্গাপুজোর মতো শহরের তাবড় কালীপুজো ঘিরেও এ বার একই রকম বাজেট ঘাটতির হাহাকার চলছে। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, তাঁদের কেউ গত বারের বাজেটের প্রায় অর্ধেক টাকায় পুজো করছেন। কেউ আবার পুজোর জন্য মোটা টাকা ঋণ নিচ্ছেন ব্যাঙ্ক থেকে! এক পুজো উদ্যোক্তা আবার বললেন, ‘‘স্পনসর না পেলেও কিছু শুভানুধ্যায়ীর সাহায্যে কাজ ঠিক নেমে যেত। এ বার তাঁদের হাতেও একদম টাকা নেই। দেখা হলেই পরের বার হবে বলে তাঁরা হাত তুলে দিচ্ছেন!’’ সামনের বারের পুজোর আগেও এই টাকার টানাটানি মিটবে না বলেই তাঁর দাবি।

থিমের বাড়বাড়ন্ত না থাকলেও কালীপুজোর মূল খরচ আলো, জলসা আর ভোগের। পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এর পরেই তালিকায় থাকে বিসর্জন আর ডেকরেটর্সের খরচ। দুর্গাপুজোয় টাকা দেওয়ার পরে কালীপুজোর জন্য ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বরাদ্দ রাখে স্পনসরেরা। তবে কিছু ‘শুভানুধ্যায়ীর সাহায্যে’ স্পনসরের টাকা কম পেলেও এত দিন কালীপুজোর জৌলুস ধরে রাখা নিয়ে সমস্যা হয়নি। কিন্তু ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির উপরে গত কয়েক বছর ধরে আইনি মোকদ্দমা শুরু হওয়ার পরে প্রাথমিক ভাবে সেই টাকাতেও কোপ পড়বে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়। তা-ও কোনও মতে সামলে নেওয়া গিয়েছিল। তবে পুজো কমিটিগুলির কাছে এ বার সব চেয়ে বড় চিন্তা দেশজোড়া অর্থনৈতিক মন্দা।

 

 


Find Out More:

Related Articles: