এবার পশ্চিমবঙ্গের দেখাদেখি ওড়িশা সরকারও বিধান পরিষদ গঠন নিয়ে আগ্রহ দেখাল। সংসদে বাদল অধিবেশন শুরুর আগের দিন কেন্দ্রের তরফে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বৈঠকে যোগদানের জন্য । সেই বৈঠকে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের দাবি পেশ করেন। তখনই হঠাৎ বিজু জনতা দলের সাংসদরা বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব পেশ করেন।
প্রসঙ্গত, সারা ভারতে এখনও ছ’টি রাজ্যে বিধান পরিষদ আছে। সেগুলি হল বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং কর্ণাটক। অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় গত বছর বিধান পরিষদ অবলুপ্তির প্রস্তাব পাশ হলেও তা এখনও সংসদের ছাড়পত্র পায়নি।সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ধাঁচে তৈরি বিধান পরিষদেও বিধানসভার মতোই ‘নির্বাচিত’ হতে হয়। কিন্তু সেখানে সাধারণ নাগরিকরা ভোট দেন না। সেখানে ভোট দেন বিভিন্ন ক্ষেত্রভুক্ত পেশার মানুষ, নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি এবং পঞ্চায়েত-পুরসভার মতো স্থানীয় প্রশাসনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কেরা।
তবে বিধান পরিষদ কী ? সে বিষয়ে একটু খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক -
১) সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ধাঁচে তৈরি বিধান পরিষদেও বিধানসভার মতোই ‘নির্বাচিত’ হতে হয়। রাজ্য আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট বা এক কক্ষবিশিষ্ট হতে পারে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম বিধান পরিষদ এবং নিম্ন কক্ষ বিধানসভা।
২) বিধান পরিষদের কার্যকালের মেয়াদ ৬ বছর। প্রতি ৬ বছর অন্তর বিধান পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রতি ২ বছর অন্তর বিধান পরিষদের এক তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর গ্রহণ করে থাকেন।ভারতীয় সংবিধানের ১৭১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি হবে না। আবার কোনও অবস্থাতেই তা ৪০-এর কমও হবে না।
৩) অর্থবিল ছাড়া যে কোন বিল বিধান পরিষদে উত্থাপন করা যায়। বিধানসভায় পাশ হওয়া কোনো বিলকে বিধান পরিষদ সর্বাধিক ৪ মাস পর্যন্ত আটকে রাখতে পারে।
৪) সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যের মন্ত্রীসভা শুধুমাত্র নিম্নকক্ষ অর্থাৎ বিধানসভার কাছেই দায়বদ্ধ। ফলে শাসন সংক্রান্তও তেমন ক্ষমতা নেই বিধান পরিষদের।