দেশজুড়ে বিজেপি–আরএসএসের তথাকথিত দেশভক্তদের উল্লাসে ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শে বিশ্বাসী মানুষরা দিশেহারা । তবে আশার আলো হিসাবে দেখা দিয়েছে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা বিধানসভার ফলাফল । সাধারন মানুষ যে আরএসএস –বিজেপির কথিত দেশভক্তির চেয়ে রুটি–রুজির দিকে বেশি নজর দিতে চাইছে তার সংকেত হল এই নির্বাচনের ফলাফল । কিন্ত
রাজ্যসভার সাংসদ ও জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহর মুক্তির দাবিতে সংসদে সরব বিরোধীরা । সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই ফারুক আবদুল্লাহ গ্রেফতার নিয়ে সংসদে বিরোধীরা যে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদে নামবে তা ভাবতেই পারেননি মোদী সরকার।
সোমবার সকালে অধিবেশনের শুরুতেই ফারুক আবদুল্লাহর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকসভার স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘স্যর, ফারুক আবদুল্লাহ আসেননি। হয় সরকারকে নির্দেশ দিন, ওঁকে মুক্তি দিতে, নইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখনই এ বিষয়ে বিবৃতি দিতে বলুন।’’
স্পিকার ওম বিড়লা, ‘নতুন সদস্যেরা আগে শপথ নিন, তার পর দেখা যাবে’— বলে তাঁকে নিরস্ত করার চেষ্টা করলে একজোটে হিন্দিতে ‘বিরোধীদের উপর হামলা বন্ধ হোক, ফারুক আবদুল্লাহকে রেহাই দেওয়া হোক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) এবং ডিএমকে সাংসদরা। স্লোগান দিতে দিতে সকলে ওয়েলে নেমে আসতে শুরু করলে ওম বিড়লা বলেন, ‘‘সব কিছু নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত আমি। কিন্তু আগে নিজেদের আসনে ফিরে আসুন। সংসদ স্লোগান দেওয়ার জায়গা নয়। তর্ক বিতর্ক এবং আলোচনা করতেই এখানে আসা।’’
এর পরেও দমে যাননি বিরোধীরা। বরং প্রশ্ন তোলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপি-রা যেখানে কাশ্মীরে যাওয়ার অনুমতি পেলেন, সেখানে বিরোধী নেতাদের সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? ফারুক আবদুল্লাহকে বন্দি করার সিদ্ধান্তকে নির্মম বলে উল্লেখ করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘১০৮ দিন ধরে বন্দি ফারুক আবদুল্লাহ। এটা কী ধরনের নির্মমতা? অবিলম্বে ওঁকে সংসদে আনা প্রয়োজন। এটা ওঁর সাংবিধানিক অধিকার।’’
ফারুক আবদুল্লাহকে বন্দি করার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন ডিএমকে নেতা টিআর বালুও। তিনি বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে বন্দি করা হয়েছে ফারুক আবদুল্লাহকে। অবিলম্বে এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করুন স্পিকার।’’
তবে বিরোধীরা সংসদের অধিবেশনের প্রথম দিনেই যেভাবে ফারুক আবদুল্লাহ-র ইস্যুতে সম্মিলিতভাবে গর্জে উঠেছে তাতে এটা স্পষ্ট ফারুক আবদুল্লাহকে মুক্তি দেওয়া না হলে সংসদ চালানো সম্ভব হবে না ।