দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন ! তাই সরকারি পদে থাকতে চান না । সুতরাং পদত্যাগ করলেন । কাশ্মীরি যুবক শাহ ফয়সল কাশ্মীরিদের ইনসাফ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বাক স্বাধীনতার দাবিতে আইএএস পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন কয়েক বছর আগেই । কয়েক সপ্তাহ আগে না করে কাশ্মীরে চলমান পরিস্থিতিতে কথা বলার অধিকারের দাবি জানিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন আই এ এস কান্নান গোপীনাথন । তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কিনা তা এখনও জানা না গেলেও আর একজন আইএএস আজ শুক্রবার পদত্যাগ করলেন । দেশের গণতন্ত্রের অস্তিত্ব বিপন্ন এই অবস্থায় আমলা হিসাবে কাজ করতে চান না বিজেপি শাসিত কর্নাটকের আইএএস এস শশীকান্ত সেন্থিল । শশীকান্তের মতে, দেশে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব বিপন্ন।
শুক্রবার দক্ষিণ কন্নড় জেলার ডেপুটি কমিশনারের পদ থেকে সরে দাঁড়ান শশীকান্ত। নিজের ইস্তফাপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘অভূতপূর্ব ভাবে গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তিগুলির সঙ্গে আপস করা হচ্ছে’। নিজের কাজ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য জনতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘দেশে আর আগের মতো অবস্থা নেই।’’ এই সিদ্ধান্তটি যে পুরোপুরি তাঁর ব্যক্তিগত, সে কথাও উল্লেখ করেছেন শশীকান্ত।
তিনি লিখেছেন, ‘দেশের বিপন্ন গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে সরকারি আমলা হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়াটা অনৈতিক হবে।’ যদিও এটি সম্পূর্ণ তাঁর নিজস্ব মত বলেও জানিয়েছেন শশীকান্ত। পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর ইস্তফার পিছনে কোনও একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা ঘটনা জড়িত নয়।
২০০৯ সালের কর্নাটকের আইএএস ব্যাচের আমলা শশীকান্ত বছর দুয়েক আগে দক্ষিণ কন্নড় জেলার ডেপুটি কমিশনার পদে যোগ দেন। এ দিন নিজের ইস্তফাপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আমার আরও মনে হয়, আগামী দিনে খুবই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে দেশের মৌলিক কাঠামো। এবং আইএএসের বাইরে থেকে সকলের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাওয়াটাই ভাল হবে।’
শশীকান্তের ইস্তফার পর উঠে আসছে কাশ্মীরের শাহ ফয়সল এবং কেরলের কন্নন গোপীনাথনের ইস্তফার প্রসঙ্গও। শশীকান্তের মতোই তাঁরাও সিভিল সার্ভিসে ছিলেন। তবে কেন্দ্রের ‘জনবিরোধী নীতি’র অভিযোগ করে পদত্যাগ করেছিলেন ২০০৯–এ আইএএস পরীক্ষায় শীর্ষ স্থানাধিকারী শাহ ফয়সল। অন্য দিকে, কাশ্মীরের লক্ষ লক্ষ মানুষদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলে দাবি করে আমলা পদ থেকে সরে দাঁড়ান কেরলের আইএএস আধাকারিক গোপীনাথন।
শাহ ফয়সল , গোপীনাথন, শশীকান্তের পর আর কোন আইএএস পদত্যাগ করবেন তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে কেন্দ্রকে । একের পর এক আইএএস অফিসারের পদত্যাগে সরকারের ভাবমূর্তি যে ধাক্কা খেয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই ।